বের হওয়ার সকল রাস্তা বন্ধ। ৪ মাস হল বাড়ি থেকে বের হতে পারে না একটি পরিবার। সাত সদস্য নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন কেশবপুর উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের মাওলানা ইমদাদুল্লাহ। প্রতিবেশীরা তাঁদের বের হওয়ার পথ আটকে দিয়েছে। জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই এটা করেছে তাঁরা। ওই পরিবারটি এখন বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হবে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়নি। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ারও কোন পথ নেই। রাস্তা অবরুদ্ধ করে রাখায় তাদের বাড়িতে কোন আত্মীয়-স্বজনও আসতে পারছে না। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন সুরহা পায়নি পরিবারটি।
অভিযোগ সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের মাওলানা ইমদাদুল্লাহর পূর্ব পুরুষ থেকে এজমালিভাবে (যৌথ মালিকানা) সৃষ্টি করা বসতবাড়িতে যাতায়াতের রাস্তা দুইটি বন্ধ করে দিয়ে নারী-শিশুসহ পরিবারের ৭ জন সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট একই গ্রামের মৃত অজিয়ার রহমানের ছেলে মো. হাসান বাড়ির দক্ষিণ পাশের যাতায়াতের রাস্তাটি কাঠ এবং বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। অপরদিকে, মাঠের ফসলাদি আনার জন্য বাড়ির পেছন পাশের রাস্তাটি মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে ইয়াহিয়া মাহমুদ, গোলাম কিবরিয়া ও জাকারিয়া হোসেন ইটের গাঁথুনি ও বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়।
মাওলানা ইমদাদুল্লাহ বলেন, তাদের পূর্ব পুরুষেরা সিদ্ধান্ত করে বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য এজমালি (যৌথ মালিকানা) জমির ওপর রাস্তা তৈরি করেন। ওই রাস্তা দিয়েই দীর্ঘ বছর ধরে সরকারি রাস্তায় উঠতেন। সম্প্রতি তাদের প্রতিবেশীরা ষড়যন্ত্র করে ওই রাস্তা বন্ধ করে দখল করে রেখে তাঁর পরিবারকে অবরুদ্ধ করে দিয়েছে।
ইমদাদুল্লাহ আরও বলেন, এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন সুরহা পায়নি। অবরুদ্ধ অবস্থায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ারও কোন পথ নেই। এমনকি তার বড় ভাই মাওলানা ওলিউল্লাহ ও তার ছোট চাচা মশিয়ার রহমান পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়িতে আসতে পারছেন না।
অভিযোগের বিষয়ে মো. হাসান বলেন, আমাদের ব্যক্তিগত জমি ঘিরে দিয়েছি। ইমদাদুল্লাহ যদি আমাদের মধ্যে কোন সম্পত্তি পায় তাহলে তাকে দেওয়া হবে।
সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন দফাদার বলেন, গ্রাম পুলিশ দিয়ে বন্ধ করা রাস্তাটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে আবারও বন্ধ করে দিয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, দ্রুত সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।