কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মুদি দোকানে চুরির অভিযোগে ১১ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। এ সময় ওই ছাত্রের শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও চুল কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত রোববার রাত ১১টার দিকে শুরু হওয়া নির্যাতন চলে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রের মা বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।
মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আদালতের মাধ্যমে তাঁদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মারধরের শিকার ওই মাদ্রাসাছাত্র রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। কুষ্টিয়া মাদ্রাসাতুল আবরার মাদ্রাসার হাফেজ জিয়া কওমীর ছাত্র সে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের মৃত নজির উদ্দিনের ছেলে সামছুল হক (৫০), একই এলাকার মৃত আদু শেখের ছেলে মনোহার শেখ মুনা (৫০), মৃত আহাদ আলীর ছেলে মো. সোলাইমান (৫৫), আতিয়ার রহমানের ছেলে মো. রিফাত (২০), সদর থানার ফুলতলা এলাকার নুর হোসেনের ছেলে মো. জিহাদ (৩৫)। অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অপরজনের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, ওই মাদ্রাসাছাত্র আগে কুমারখালীর নন্দলালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগর এলাকার দারুল আহাদ আল ইসলামিয়া নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। গত রোববার রাতে ওই ছাত্র বর্তমান মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে পূর্বের মাদ্রাসা আলাউদ্দিন নগরে আসে।
ওই দিন রাতেই মুদি দোকানের টিনের বেড়া কেটে বিস্কুট, জুস ও খাদ্যসামগ্রী খায় ওই ছাত্র। সেসময় আসামিরা টের পেয়ে ওই মাদ্রাসাছাত্রকে গাছে বেঁধে ব্যাপক মারধর করে, সিগারেটের আগুন দিয়ে শরীর পুড়িয়ে দেন এবং মাথার চুল কেটে দেন। রাত ১১টা থেকে শুরু হওয়া নির্যাতন চলে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত।
এরপর খবর পেয়ে ওই ছাত্রের মা তাকে উদ্ধার করে এবং গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মারধর ও চুল কাটার ঘটনা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত দোকানদারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দোকানে ঢুকে চুরি করেছিল মাদ্রাসা ছাত্র। তাকে হাতেনাতে ধরে মারধর করা হয়েছিল। স্থানীয় ছেলেপেলে চুল কেটেছিল। এখন চুল কাটাই বড় অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা আসলে ভুল হয়েছে।’
কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুকল্যাণ বিশ্বাস বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন ছাত্রের মা। মামলায় ৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।