শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে শেখ সহিদুর রহমানের যোগদানের প্রতিবাদে উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছাত্র প্রতিনিধিরা উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এর আগে সকাল ১০টা থেকে তাঁরা ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ছাত্র প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেন, শেখ সহিদুর রহমান ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত শ্যামনগরে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের পুনর্বাসনে ভূমিকা রেখেছেন বলেও তাদের অভিযোগ।
তাঁরা আরও দাবি করেন, সহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে বরসা এনজিওর নামে স্থানীয় হাজারো মানুষের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, তিনি সাতক্ষীরা সদর আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমেদ রবির ভাগ্নে পরিচয়ে বিগত ১০ বছরে সমাজসেবা অফিসকে তাঁর ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন মুহাইমিনুল ইসলাম তানভীর, মাসুম বিল্লাহ, বিল্লাল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, এম আব্দুল্লাহ, ওমর ফারুক, জাকারিয়া, সাগর, ইমন ও নুরুল হুদা প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ সহিদুর রহমান বলেন, ‘আমি মূলত শ্যামনগরে যোগদান করব না। যেহেতু ঢাকা থেকে অর্ডার হয়েছে, তাই কাগজপত্র সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে শ্যামনগরে আসতে বাধ্য হয়েছি।’
শেখ সহিদুর রহমান আরও বলেন,‘আমি দূরে কোথাও বদলির জন্য আবেদন করব। বিক্ষোভ কর্মসূচির বিষয়ে কিছু জানি না, কারণ আমি এখনও অফিসে যাইনি। আমি বর্তমানে ইউএনও স্যারের সঙ্গে রয়েছি।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত আজকের পত্রিকাকে বলেন, আজ বুধবারই শেখ সহিদুর রহমানের যোগদানের কথা ছিল। এজন্যই শ্যামনগরে এসেছেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হওয়ায় তিনি ইউএনও অফিস থেকে কার্যালয়ে আর যাননি।
সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চরদাহ গ্রামের বাসিন্দা শেখ আহম্মদ আলীর ছেলে শেখ সহিদুর রহমান এলাকায় ‘চালাক ময়না’ নামে পরিচিত। বর্তমানে তিনি কালীগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত আছেন। শ্যামনগরের সমাজসেবা কর্মকর্তাকে কালীগঞ্জে আর কালীগঞ্জের এই কর্মকর্তাকে শ্যামনগরে বদলি করা হয়েছে।
২০০৫ সালে একটি প্রকল্পের অধীনে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে সমাজসেবা অধিদপ্তরে যোগ দেন সহিদুর রহমান। উচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে রাজস্ব খাতে চাকরি স্থানান্তর ও স্থায়ীকরণ হওয়ায় তিনি প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে উন্নীত হন। চাকরিজীবনের শুরু থেকেই তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও সদর উপজেলায় সমাজসেবা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। বরসা এনজিওসহ সিডি হাসপাতাল ও চায়না বাংলা শপিং কমপ্লেক্সে তাঁর মালিকানা রয়েছে বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।