পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদে ভাঙন শুরু হয়েছে। নদের পানি ও এর গতিবেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে কপিলমুনি ইউনিয়নের ভেদামারি গ্রাম ও হরিঢালী ইউনিয়নে দর্গামহল গ্রাম বিলীন হতে চলেছে। ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে যাওয়ায় এখানকার মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।
গত সোমবার থেকে ভাঙন তীব্র হয়। আজ বুধবারও ভাঙন অব্যাহত আছে। দুই দিনে প্রায় ১২-১৪টি ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে গেছে।
দর্গামহল গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদার ভিটায় আমরা শত বছর ধরে বসবাস করে আসছি। কপোতাক্ষ নদে ভাঙনে আমাদের সবকিছু চলে গেছে। অল্প একটু জমির ওপর একটা ঘর ছিল, তা-ও গত রাতে আকস্মিক ধসে যেতে বসেছে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে সারা রাত বসে থাকি। কখন না ঘরটা বিলীন হয়ে যায়। আমাদের আর জমি কেনার ক্ষমতাও নাই যে অন্যখানে জমি কিনে বসবাস করব। আমাদের পূর্বপুরুষের প্রায় ৫০-৬০ ঘরবাড়ি নদের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেকেই জমি কিনে অন্যখানে বসবাস করছে আবার অনেকেই রাস্তার পাশে সরকারি জায়গায় বসবাস করছে।’
ভেদামারি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, গত দুই দিনে তাঁর বেশ কয়েকটি ঘর বিলীন হয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী রাজু আহম্মেদ হাওলাদার বলেন, ‘আমরা ভাঙনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বরাদ্দ এলে শুকনার সময় কাজ শুরু হবে।’
উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু বলেন, ‘ভাঙন বিষয়ে শুনে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এখানে মোটা অঙ্কের টাকার প্রয়োজন। সার্ভে করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি, বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করব।’
খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ‘ভেদামারি, মালথ আগড়ঘাটা ও দর্গামহলের ভাঙন দীর্ঘদিনের। এই ভাঙনের ফলে দুটি গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে। সে কারণে কপোতাক্ষ নদের ওই স্থানগুলো ভাঙন ঠেকাতে এক কিলোমিটার দূর দিয়ে বিকল্প নদী খনন করা হচ্ছে। সেটি শেষ হলে এখানকার ভাঙন থাকবে না বলে আশা করছি।’