খুলনা প্রতিনিধি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিএমএ নেতাদের বৈঠকের পরও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেননি চিকিৎসকেরা। টানা তিন দিনের কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা। নাগরিক নেতারা দাবি জানিয়েছেন কর্মসূচি প্রত্যাহারের। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি করলেও বিএমএ নেতারা তা অস্বীকার করেছেন।
খুলনা শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. শেখ নিশাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে জেলার সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির তৃতীয় দিন ছিল আজ শুক্রবার। কর্মবিরতির কারণে সাধারণ রোগীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
এ ব্যাপারে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কথা হয় আকরাম হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, তার নানিকে নিয়ে গত ৩ দিন হাসপাতালে ভর্তি। সিনিয়র কোনো চিকিৎসক আসেননি। জুনিয়র চিকিৎসক দেখছেন। মো. আনেয়ার ইসলাম নামের আরেজন জানান, তিনি মাকে নিয়ে ৪ দিন আছেন হাসপাতালে। প্রথমদিন চিকিৎসক যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেভাবেই চিকিৎসা চলছে।
অপরদিকে আজ দুপুর ৩টা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। আড়াই ঘণ্টা বৈঠকের পর কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) রাশিদা সুলতানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অ্যাডমিন) সামিউল সামিউল ইসলামসহ চারজন ও বিএমএ খুলনার সভাপতি ডাক্তার শেখ বাহারুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মেহেদি নেওয়াজসহ প্রমুখ।
এদিকে সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় বৈঠক। এ ব্যাপারে বিএমএ খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, চিকিৎসকের ওপর হামলাকারীরাকে গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় কর্মসূচি চলছে। তবে জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।
অপরদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) রাশিদা সুলতানা বলেন, তাঁরা দেখতে এসেছিলেন। দেখে গেলেন। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আর জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
অপরদিকে খুলনা জন উদ্যোগের সদস্যসচিব মহেন্দ্রনাথ সেন বলেন, জনগণকে ভোগান্তি রেখে কোনো আন্দোলন মেনে নেওয়া যায় না। তিনি কর্মবিরতি প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এদিকে বিএমএ সাধারণ সম্পাদক মেহেদি নেওয়াজ স্বীকার করেন কর্মবিরতির কারণে কিছুটা হলেও চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে রাতে সার্কিট হাউসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভাগীয় প্রশাসনের বৈঠক চলছে।