পৌষ্য কোটাসহ সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল এবং আবেদন ফি কমানোর দাবিতে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর কোর্সের ক্রেডিট ফি ও সেমিস্টার ফি কমানোর দাবি জানান তাঁরা।
আজ শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পৌষ্য কোটা রাখা মানে জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটকে অস্বীকার করা। একই সঙ্গে শিক্ষার্থী ভর্তিতে যে মুক্তিযুদ্ধ কোটা রয়েছে, সেটাও বাতিলে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই এসব কোটা রাখা মানে মেধাবী শিক্ষার্থী ও মুক্তিকামী জনতার সঙ্গে হাস্যরস করা।’
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির শিক্ষার্থী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘২৪ জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পৌষ্য কোটা, মুক্তিযুদ্ধ কোটাসহ কোনো ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা রাখার যৌক্তিকতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাদের সন্তানেরা শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা পেয়ে থাকেন। তারপরও যদি শিক্ষকদের সন্তানদের কোটা সুবিধা প্রদান করা হয়, তা হবে সেখানে শিক্ষকদের মেধাকে প্রশ্নবিদ্ধ ও তাচ্ছিল্য করা।’
জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ গ্রামের মধ্যবিত্ত ও নিম্নশ্রেণির পরিবারের সন্তানেরা পড়াশোনা করেন। সে ক্ষেত্রে এ ধরনের অযৌক্তিক কোটা রাখা ও ভর্তির আবেদন ফি অতিরিক্ত রাখা মানেই তাঁদের অধিকারবঞ্চিত করা।’
পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন ফি ১২০০ টাকা। এই ফি রাখা হলে নিম্নবিত্ত শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থী আবেদনই করতে পারবেন না। আমরা চাই, এ ফি যৌক্তিক একটা পর্যায়ে নিয়ে আসা হোক।
অন্যদিকে সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ফিও যেন দ্রুত কমিয়ে আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট দাবি জানাচ্ছি।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহরাব সাদাত, কেমি কৌশল ও পলিমার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কিরণ হাওলাদার, রাজনৈতিক অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জুনায়েদ প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সাজেদুল করিম গণমাধ্যমে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে তাদের দাবিদাওয়া লিখিত আকারে প্রদান করুক। তাহলে আমরা এসব দাবি একাডেমিক কাউন্সিলে সুপারিশ করব। কাউন্সিল শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বিবেচনা করে দেখবে তখন।’
এর আগে একই দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। পরে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব ভর্তি পরীক্ষায় সব ধরনের পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।