সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যকেন্দ্র পাটকেলঘাটা বাজারের গরু-ছাগলের হাটের বেহাল দশা। দূরদূূরান্ত থেকে কোনো ক্রেতা-বিক্রেতা এখন আর গরু-ছাগল কিনতে বাজারে আসেন না। বাজারের অব্যবস্থপনার কারণে একটু বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি জমে যায়। সরকার প্রতিবছর এই বাজার থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে। তার পরেও বাজারের কোনো উন্নয়ন হয় না। ব্রিটিশ আমলে গড়ে ওঠা গরু-ছাগলের হাটটি এখন প্রায় ধ্বংসের পথে। বাজারে নেই কোনো পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা। নেই কোনো সরকারি টয়লেট। রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। হাটটি প্রাচীনতম হলেও অনুন্নত হওয়ার কারণে এই সুযোগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে অনেক গরু ছাগলের হাট গড়ে উঠেছে। যে বাজার থেকে সরকার পায় না কোনো রাজস্ব।
এ বিষয়ে পাটকেলঘাটা বাজারের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, হাটটি রাস্তাসংলগ্ন না হওয়ার কারণে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পরিবহনব্যবস্থা ব্যাহত হয়। উপজেলার অনেক হাটে সরকারিভাবে রাজস্ব নির্ধারণ না থাকার কারণে অনেক কমে গরু-ছাগলের পাস দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গরু ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে অতিরিক্ত খাজনা আদায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রতি ইজারাদারদের জোর-জুলুমের কারণে পশুর হাটটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বাজারটি পুনরুদ্ধার করতে হলে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা, ইজারাদারদের ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রতি মনোভাবের পরিবর্তন আনলে বাজারটি আবারও ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
পাটকেলঘাটা হাটবাজার ইজারা কমিটির প্রধান ও জাতীয় পার্টির নেতা এস এম আলাউদ্দিন বলেন, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঐতিহ্যবাহী পশুর হাটটি রক্ষা করতে আমরা সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা পাস নির্ধারণ করেছি। সাতক্ষীরা জেলার কোনো পশুর হাটে এত নিম্ন রেটে পাস নেই।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য মাহফুজা সুলতানা রুবি পাটকেলঘাটা বাজারের গরু-ছাগলের হাট পরিদর্শন করে উন্নয়নের ব্যাপারে আশ্বাস প্রদান করেছেন।
পাটকেলঘাটা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী নিজামউদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, আধুনিক বাজার ব্যবস্থাপনা ও মেইন সড়ক থেকে বাজারটি দুরে থাকায় বাজারে ক্রেতাসাধারণ কমে যাচ্ছে। যে কারণে গরু-ছাগলের হাটটি আর জাঁকজমকপূর্ণ হচ্ছে না।
তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে পাটকেলঘাটা বাজারের ড্রেনেজসহ রাস্তাঘাটের উন্নয়নে নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এরই মধ্যে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন চলমান রয়েছে।