খুলনা প্রতিনিধি
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটির ২৩ বাংলাদেশি নাবিকের মধ্যে রয়েছেন খুলনার তৌফিকুল ইসলাম। দস্যুদের কবলে পড়ার পর স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে সেখানকার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানান। বলেন, ‘আম্মা আমি ভালো আছি, চিন্তা করো না’, এরপরই ফোনের সংযোগ কেটে যায়। কথা বলার সময় তাঁর ফোনটি কেড়ে নেওয়া হয় বলে ধারণা পরিবারের।
খুলনা মহানগরীর ছোটবয়রা করীমনগর এলাকার বাসিন্দা ও জাহাজের সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার তৌফিকুল ইসলাম। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার পর মা ও স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে সবশেষ কথা হয় তাঁর।
আজ বুধবার দুপুরে করিম নগরে তৌফিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার দুই সন্তান তাসফিয়া তাহসিনা (৭) ও আহমেদ রুসাফি (৫) কাঁদছে। বাবা ইকবাল হোসেন, মা দিল আফরোজ ও স্ত্রী জোবায়দা নোমান প্রায় বাকরুদ্ধ।
ইঞ্জিনিয়ার তৌফিকুল ইসলামের মা দিল আফরোজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বউমার সাথে কথা বলার পর ও (তৌফিক) আমার সাথে কথা বলে। বলল-আম্মা আমি ভালো আছি, চিন্তা করো না। আমি বললাম চিন্তা তো লাগেই। কী করব যে অবস্থায় তোমরা আছ, বন্দী অবস্থায়, টেনশন তো হয়। এই বলতে বলতেই আর কথা নাই। মনে হলো মোবাইল ফোনটা কেড়ে নিল। এই শেষ কথা হয়েছে আমার সঙ্গে।’
তৌফিকুল ইসলামের স্ত্রী জোবায়দা নোমান বলেন, ‘বিকেল ৫টার দিকে কথা হয়েছিল। তিনি ফোনে বলেছেন, দোয়া করো। আমাদের সোমালিয়ায় নিয়ে যাচ্ছে, হয়তো আর যোগাযোগ হবে না। কী হবে কিছুই তো আসলে জানি না। এটাই শেষ কথা। এরপরে আম্মার (শাশুড়ি) সাথে কথা বলার সময় ফোনটা কেটে যায় এবং বন্ধ হয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে ইফতেখার স্যার ফোন করে পরিবার থেকে লোক পাঠাতে বলেছিলেন। আমার মেজ ভাশুর এবং আমার ভাই দুজনে চট্টগ্রাম গেছেন। আমাদের দাবি একটাই সবকিছুর বিনিময়ে হলেও সে (তৌফিকুল) আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। তার সহকর্মীরাও আল্লাহর রহমতে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে ফিরে আসুক।’
এ দিকে ছেলের শোকে বাবা ইকবাল হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন:–