ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বাগেরহাটের মোল্লাহাটে গত চার দিনের টানা বৃষ্টিতে বোরো মৌসুমে বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে উপজেলার ১৫ হেক্টর জমির বোরো বীজতলা পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা যায়, চলতি বছর বোরো মৌসুমে ২৫৯ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা বীজতলা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে ১৫ হেক্টর জমির বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া শীতকালীন সবজি ২৫ হেক্টর, খেসারি ২০ হেক্টর, সরিষা ১৫ হেক্টর, মসুর ৫ হেক্টর, মরিচ ৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে উপজেলার কৃষকেরা। তবে প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের বেদবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আরোজ মোল্লা বলেন, চলতি বোরো মৌসুমি ৩০ প্যাকেট ধানবীজ পাতিয়েছি। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা ৪ দিনের বৃষ্টিতে আমার সব বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। আমি প্রতি বছর ১২ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করে থাকি। এখন যদি বীজতলা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে এ বছর আমার আর ধান চাষ করা হবে না।
একই এলাকার কুলিয়া গ্রামের কৃষক কামাল শেখ বলেন, ‘আমি এবার ১০ বিঘা জমি চাষের জন্য ২৮ প্যাকেট ধানবীজ পাতিয়েছি। কেবল এক সপ্তাহ বয়স হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে টানা বৃষ্টিতে সব বীজতলা এখন পানির তলে। এমন অবস্থায় নতুন করে যে আবার বীজতলা পাতাব, তারও সময় নেই। এখন আমি খুব দুশ্চিন্তায় পড়েছি কীভাবে জমি চাষ করব।'
উপজেলার দারিয়ালা গ্রামের কৃষক শাহাজান মোল্লা বলেন, ‘এ বছর বোরো মৌসুমে ১৫ প্যাকেট ধানবীজ ও খেসারি বপন করেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সব এখন পানির নিচে। বীজতলা যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে এ বছর আর ধান লাগানো হবে না। আমার বেশির ভাগ জমি ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করা। প্রতিবছর ধান বিক্রি করে ইজারার টাকা পরিশোধ করি, সেটাও পরিশোধ করতে পারব না।'
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অনিমেষ বালা জানান, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা চার দিনের বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে দ্রুত আবহাওয়া ভালো হলে খেত থেকে দ্রুত পানি সরে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমবে। এরপর ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হবে। কৃষকদের দ্রুত খেত থেকে পানি সরানো এবং এই মুহূর্তে নতুন করে বীজ না পাতানোর জন্য পরামর্শ দেন তিনি।