শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
বাবার কাছে টাকা নিয়ে ঈদের জন্য নতুন জামা-জুতা কিনেছিলেন কিশোরী মৌসুমী। সেই জামা মায়ের পছন্দ না হওয়ায় মেয়েকে তিরস্কার করেন। এদিকে মেয়ে এ নিয়ে অভিমান করে গোপনে কীটনাশক পান করে। একপর্যায়ে বুঝতে পেরে হাসপাতালে নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, রোজা রাখার কারণে ওই কিশোরী শারীরিকভাবে দুর্বল ছিল, এর ফলে তাকে বাঁচানো আরও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছিল।
আজ বুধবার সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের শংকরকাটি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। মৌসুমী ওই গ্রামের দিনমজুর মিজানুর রহমানের মেয়ে। সে শংকরকাটি সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল।
পরিবার ও স্থানীয়রা বলছে, গতকাল মঙ্গলবার ঈদের কেনাকাটার জন্য রীতিমতো বায়না ধরে বাবার কাছে ১ হাজার ৩০০ টাকা নেয় মৌসুমী। সে দিন বিকেলে বড় বোনকে সঙ্গে নিয়ে শ্যামনগর বাজারে গিয়ে নিজের পছন্দের জামা-জুতা কিনে আনে সে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নতুন জামা-জুতা মাকে দেখাতে গেলে বাধে বিপত্তি। জামা পছন্দ না হওয়ায় মেয়েকে তিরস্কার করেন তার মা। একপর্যায়ে মায়ের ওপর অভিমান করে ঘরে গিয়ে গোপনে কীটনাশক পান করে সে।
কয়েক মুহূর্ত পরে বুঝতে পেরে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত মৌসুমীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পাকস্থলী ওয়াশ করার পর ঘণ্টা দু-এক স্থিতিশীল ছিল তার অবস্থা। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে অবস্থার অবনতি হলে, তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে পথিমধ্যে মা-বাবার হাতে হাত রেখে মৃত্যু হয় তার।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ত্রিদেব দেবনাথ বলেন, ‘রোজা রাখার দরুন সে আগে থেকে শারীরিকভাবে দুর্বল ছিল। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার ক্ষেত্রেও তার পরিবারের সদস্যরা দেরি করে ফেলে।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আনিচুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন ভাই-বোনের মধ্যে ছোট ছিল মৌসুমী। ঈদের আগের দিনে তার এমন মৃত্যু গোটা এলাকার মানুষকে কাঁদাচ্ছে।’
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’