অন্য সময়ের তুলনায় বর্ষায় ছাতার ব্যবহার বেড়ে যায়। তাই অন্যান্য সময়ের তুলনায় ছাতার কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বৃষ্টির কারণে লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া বাজার, লক্ষ্মীপাশা বাজার, এডেন্দা বাজার, মানিকগঞ্জ বাজার, লাহুড়িয়া বাজার, শিয়রবর বাজার, দিঘলিয়া বাজার, নলদী বাজার, ইতনা বাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে নষ্ট ছাতা মেরামত করতে লোকজনের ভিড় বেড়েছে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছাতার কারিগরদের ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে। তাঁরা নাওয়া-খাওয়া ভুলে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন। অন্য ব্যবসায়ীরা বসে অলস সময় পার করলেও ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা।
লোহাগড়ার মাধবহাটি গ্রামের ছাতার কারিগর মো. ইয়াছিন শেখ জানান, প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি এ পেশায় জড়িত। বছরের ছয় মাস তিনি এ পেশায় থাকেন আর বাকি মাসগুলো অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি দৈনিক ৮ থেকে ১০টি ছাতা মেরামত করেন। দৈনিক ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করেন। তবে করোনার কারণে এবার একটু কাজ কম বলেও জানান তিনি।
ছাতার কারিগর নজির শেখ বলেন, ‘আমি এ পেশায় ৩০-৩৫ বছর আছি। বছরের এ সময়ে আয় বেশি হয়। কিন্তু এখন করোনার কারণে মানুষ ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছে না। তাই এবার রোজগারও কম হচ্ছে। বছরে ছয় মাস আমি এ পেশায় থাকি। বাকি ছয় মাস পরের জমি বর্গাচাষ করে সংসার চালাই।’
ছাতা মেরামত করতে আসা ইন্দ্রজিত বলেন, ‘আমার বাড়ি শালনগর। আমি একজন দিনমজুর। আমি দিন আনি, দিন খাই। করোনার কারণে বর্তমানে আয় কম। আমার এখন নতুন ছাতা কেনা সম্ভব না। তাই ঘরে থাকা পুরোনো ছাতা মেরামত করার জন্য বাজারে নিয়ে এসেছি।’
উপজেলার শামুকখোলা গ্রামের আফরোজা বেগম বলেন, ‘আমি একজন গৃহিণী। আমার স্বামী পরের জমিতে কাজ করেন। আমার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে মরিচপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। এখন বৃষ্টির সময়। তাই প্রাইভেট পড়তে গেলে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। ছেলেমেয়েদের জন্য ঘরে থাকা দুইটা নষ্ট ছাতা মেরামত করতে বাজারে নিয়ে এসেছি।’