খুলনা প্রতিনিধি
খুলনায় নিজের এক মাস ৭ দিন বয়সী মেয়ে মারিয়ামকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন মা রীতা বেগম (২৮)। আজ রোববার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল কবির তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রীতা বেগম বটিয়াঘাটা উপজেলার গাওঘরা গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এনামুল আসামি রীতা বেগমের বরাত দিয়ে বলেন, ‘শিশুটি জন্ম নেওয়ার পর থেকে বেশি কান্নাকাটি ও অতিরিক্ত পায়খানা করত। এতে শিশুটির মা বিরক্ত হয়। এ কারণে তিনি শিশুটিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন রাতে শিশুটি কান্নাকাটি করতে থাকে। পরে রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির সকলে ঘুমিয়ে পড়লে রীতা বেগম সকলের অজান্তে শিশু মারিয়মকে নিয়ে পুকুরে ফেলে দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়ে।’
এসআই আরও বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে শিশুটির দাদা ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। পরে তিনি তার ছেলে সাইফুলকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। ঘরের দরজা খোলা রাখার কারণ জানতে চান। এ প্রশ্নের উত্তর তখন সাইফুল দিতে পারেননি। তখনো তিনি জানেন না যে তার মেয়েশিশুকে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বাড়িতে শুরু হয় হইচই। সবাই নিখোঁজ মারিয়মকে শুরু করে। পরে ঘরের পাশের একটি পুকুর থেকে শিশুটির ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সারা দিন এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নাটকীয় টালবাহানা করতে থাকেন রীতা বেগম। পরে রীতা বেগমের কথা বার্তায় অসংলগ্নতা দেখা গেলে তাকে সন্দেহ করা হয়। একসময়ে তিনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সকলের কাছে পরিষ্কার করেন। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে বটিয়াঘাটা থানা-পুলিশ আটক করে। রাতে তার স্বামী সাইফুল বাদী হয়ে রীতা বেগমকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।’
এ বিষয়ে বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাজালাল বলেন, ‘শুক্রবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটের দিকে শিশু মারিয়ামের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে থানায় খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে গ্রেপ্তার রীতা বেগমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তাঁকে আজ (রোববার) সকালে আদালতে পাঠানো হয়।’