জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলে বেড়েই চলেছে বন্যার পানি। ইতিমধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে ফসলি জমি। সঙ্গে হঠাৎ যমুনা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে বিলীন হচ্ছে শত শত বসতভিটা।
স্থানীয়রা জানান, ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত এক সপ্তাহের ভারী বর্ষণে যমুনার পানি ক্রমেই বাড়ছে। প্রতি দিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে ডুবে যাচ্ছে চরাঞ্চলের অসংখ্য ফসলি জমি। যমুনার একটি শাখার তীব্র ভাঙনে ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের প্রজাপতি, শিশুয়া, চরশিশুয়া, কাশারীডোবা, মন্ডলপাড়া, আকন্দপাড়া ও চেঙ্গানিয়া গ্রামের অন্তত দুই শতাধিক বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের শত শত একর ফসলি জমি।
যমুনার একটি শাখা নদীর দুই তীরেই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। হঠাৎ এই ভাঙনের মুখে বসতভিটা অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন কাশারীডোবা গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান চৌধুরী, বাদশা আলম, লাল মিয়া, কাইজার আলী, জোনাব আলী, ডাবু বেপারীসহ অন্তত ৫০টি পরিবার।
কাশারীডোবা গ্রামের পল্লি চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম বলেন, নদী গর্ভে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে আমার পরিবার নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছি। নিজেদের জমি সবই নদী গিলে খাইছে। নিজস্ব জমি নেই। কেউ বাড়ি করার জায়গাও দেয় না। এখন কোথায় যাব, কী করব? এ নিয়ে দিশেহারা হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি।
কাশারীডোবা গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, যমুনা চরাঞ্চলে ভরা ফসলি মৌসুমে আকস্মিক বন্যা শুরু হয়েছে। এতে আমার দুই বিঘা জমির হাইব্রিট মরিচ খেত, এক বিঘা জমির কলা বাগান ও পাঁচ বিঘা জমির রোপা আমন খেত ভাঙনে ক্রমেই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। যমুনায় অসময়ের এই ভয়াবহ বন্যার পানি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে।
সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ আলম মণ্ডল বলেন, যমুনার ভাঙন ক্রমে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। অনেক মানুষ তাঁদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। সাধ্যমতো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের খোঁজ নিচ্ছি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করে সাহায্য করা হবে।