জামালপুরের ইসলামপুরে ঈদমেলায় যৌথ বাহিনীর অভিযানের এক দিন পর পাশের ডোবাতে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার জাহাঙ্গীর (৩৫) নামের একজনের লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তিনি সদর উপজেলার তিতপাল্লা দেউবাড়ী এলাকার কুদ্দুস আলী ফকিরের ছেলে।
আগের দিন বৃহস্পতিবার চাঁন মিয়া নামের আরেক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। চাঁন মিয়া পার্শ্ববর্তী মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর আটবাড়িয়া গ্রামের মঈনুদ্দিনের ছেলে। অভিযোগ না থাকায় থানা-পুলিশ স্বজনদের কাছে লাশ দুটি হস্তান্তর করেছে।
এর আগে সোমবার উপজেলার হাড়গিলা বাঁধসংলগ্ন খোলা মাঠে স্থানীয় একটি চক্র ঈদমেলার নামের জুয়াসহ অশ্লীল নাচ-গানের আয়োজন করে। খবর পেয়ে পরদিন রাতে অভিযান চালান যৌথ বাহিনীর সদস্যরা।
এ সময় নারীসহ ৩৮ জনকে আটক করে যৌথ বাহিনী। পরদিন বুধবার ইসলামপুর থানায় করা পৃথক তিন মামলায় আটক ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
ওই অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে দুই ব্যক্তি নিখোঁজ হন। পরদিন একদল ডুবুরি মেলার পাশে একটি ডোবাতে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
জানতে চাইলে ইসলামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমদাদুল হক বলেন, ‘আমি ডোবার পানি থেকে উদ্ধার করা চাঁন মিয়া নামের এক ব্যক্তির লাশের সুরতহাল করেছি।
পরিবারের ভাষ্যমতে, অভিযানের দিন চাঁন মিয়া ফুচকা বিক্রি করতে ঈদমেলায় গিয়েছিলেন। তিনি সাঁতার জানতেন না। অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে তিনি ডোবার পানিতে ডুবে মারা যান। লাশের গায়ে আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না।’ অপর এসআই মো. সোহেল রানা বলেন, ‘জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তির লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করেছি। লাশের গায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল না।’
মৃত জাহাঙ্গীরের ভাই হেলাল উদ্দিন বলেন, অভিযানের রাতে মেলায় বেড়াতে গিয়ে ছিল জাহাঙ্গীর। সেনাবাহিনীর ভয়ে হয়তো পালাতে গিয়ে তিনি ডোবার পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘ঈদমেলার নামে জুয়াসহ অশ্লীল নাচ-গানের অভিযোগে সেনাবাহিনীর একটি দল হাড়গিলা বাঁধ এলাকায় রাতে অভিযান চালিয়ে ৩ নারীসহ ৩৮ জনকে আটক করে আমাদের খবর দেন।
আমরা ঘটনাস্থল থেকে আটক ব্যক্তিদের থানায় আনি। পরে পৃথক তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অভিযানের পরে দুই দিনে ঈদমেলার মঞ্চের পাশে একটি ডোবা থেকে দুই ব্যক্তি লাশ ভেসে ওঠে। লাশের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন না থাকায় ও পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না থাকায় অঙ্গীকারনামা নিয়ে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।’