খাটিয়ায় সারিবদ্ধ চার লাশ। পাশে মানুষের ভিড়। স্বজনদের আহাজারি যেন থামছেই না। কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। এমন পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষও চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না। হৃদয়বিদারক এ দৃশ্য নাড়া দিচ্ছে উপস্থিত সবাইকেই। ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত নান্দাইলের একই পরিবারের চার সদস্যের বাড়িতে গিয়ে চোখে পড়ে এ দৃশ্যের।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নান্দাইলে রাজগাতি ইউনিয়নের বনাটী নিজ গ্রামে একই পরিবারের চার সদস্যের জনের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ অংশ নেয়।
সপরিবারের নিহতেরা হলেন—নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের বনাটী গ্রামের বাসিন্দা রইছ উদ্দিনের ছেলে সুজন মিয়া (৩৫), তাঁর স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৩০), তাঁদের শিশু সন্তান সজিব মিয়া (৮) ও ইব্রাহীম মিয়া (৫)।
জানাজায় আসা আব্দুল কদ্দুস বলেন, ‘এক সঙ্গে সপরিবারের ৪ জনের জানাজা পড়ব ভাবতেই পারি নাই। আল্লাহ্ যে কখন কাকে কীভাবে রাখে কেউ বলতে পারে না। পরিবারটিতে কেউ বাঁইচা রইল না।’
সুজন মিয়ার পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, সুজন মিয়া ঢাকার মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন। সেখানে আশপাশের এলাকায় ডাব বিক্রি করে পরিবারের চার সদস্য নিয়ে সংসার চালাতেন। গত বৃহস্পতিবার ভাতিজার বিয়ের অনুষ্ঠানে নিজ বাড়ি নান্দাইলে আসেন। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে গতকাল সোমবার পরিবার নিয়ে ঢাকায় ফেরার পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় সপরিবারে নিহত হন।
উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এগারসিন্দুর ট্রেনের সঙ্গে কনটেইনারবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ১০০ জন। গতকাল সোমবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।