ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় গরুতে ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে মো. হোসাইন (৩৩) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন নিহতের বাবা মো. সিরাজ উদ্দিন (৬৫) ও ছোট ভাই মো. মুন্না (২৩)।
গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরহোসেনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত সিরাজ উদ্দিন এবং তাঁর দুই ছেলে হোসাইন ও মুন্নাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।
আহত মো. সিরাজ উদ্দিন ও মো. আবুল কাশেম দুই ভাই। সিরাজ উদ্দিনের দুই ছেলে মো. হোসাইন ও মো. মুন্না। এদিকে আবুল কাশেমের এক ছেলে মো. রুহল আমিন।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে মো. হোসাইনের একটি গরু রুহুল আমিনের ধানখেতে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হোসাইনের ছোট ভাই মুন্নার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয় আবুল কাশেমের ছেলে রুহুলের। একপর্যায়ে রুহুল তাঁর কোমর থেকে ছুরি বের করে মুন্নাকে ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। এ ঘটনা দূর থেকে দেখে হোসাইন ও তাঁর বাবা সিরাজ উদ্দিন মুন্নাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। এ সময় তাঁদের শরীরের বিভিন্ন অংশে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন রুহুল।
এ ঘটনার পর থেকেই আবুল কাশেম ও রুহুল আমিনের পরিবারের লোকজন ঘরে তালা দিয়ে পলাতক রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছেলেকে হারিয়ে মা, স্বামীকে হারিয়ে স্ত্রী এবং বাবাকে হারিয়ে দুই সন্তান আহাজারি করছে। এ সময় নিহতের সাত বছর বয়সী ছেলে মো. জুনাঈদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, ‘আমার বাপরে যারা মারছে, আমি তারার ফাঁসি চাই।’
নিহতের স্ত্রী মোসা. মাইমুনা আক্তার মুনা (২৫) আহাজারি করতে করতে জানান, তাঁদের একটি গরু ধানখেতে যাওয়া নিয়ে অভিযুক্তরা তাঁর স্বামীকে ছুরিকাঘাত করে খুন করেছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যাঁরা এতিম বানিয়েছেন, তাঁদের ফাঁসি চান তিনি।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, গরুতে ধান খাওয়াকে কেন্দ্রকরে ছুরিকাঘাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আরও দুজন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তবে এই বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।