ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডের দরিরামপুর এলাকায় পিক-আপে উঠছে যাত্রীরা। কার আগে কে উঠবে এ নিয়ে চলছে তুমুল প্রতিযোগিতা।
এই সুযোগে স্বাভাবিক বাস ভাড়ার চাইতে প্রায় ৫ গুণ বাড়ায় যাত্রী ওঠাচ্ছে পিক-আপের চালক-হেলপাররা; নেই স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই।
যত অনিরাপদই হোক যাত্রা, আর ভাড়া যতই লাগুক এই কঠোর লকডাউনেও জীবিকার তাগিদে যেন তাদের ঢাকায় যেতেই হবে। তারা সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে গাদাগাদি করে ছুটছে ঢাকার পথে।
সরেজমিন দেখা যায়, পিকআপে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু, নারী ও পুরুষ ছুটছে ঢাকার পথে। কোথাও যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তবে এ সময় এ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা কাজল নামের একজন বলেন, 'পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে আসছিলাম। এখানে কামাই নাই, তাই পেটের তাগিদে ঢাকা চলে যাচ্ছি। জানি লকডাউন, গাড়ি নাই। তাই পিকআপে কষ্ট করে হলেও ঢাকা যাইতে হবে। কামাই না করলে খাব কী, তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা যাচ্ছি।'
আবার ঢাকায় ফেরার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও অনেকের জন্য এভাবে গাড়িতে ওঠা কঠিন। বাদল নামের একজন বলেন, 'সবাই যেভাবে হুড়োহুড়ি করে গাড়িতে উঠছে এভাবে ওঠা সম্ভব না। আল্লাহই জানে যেতে পারব কি না! তবে ঢাকা যাওয়াটা খুবই জরুরি।'
নারীদের জন্য এভাবে ভ্রমণ আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। সালমা আক্তার বলেন, ‘ঈদে কষ্ট করে বাড়িতে আসছি মা-বাবার সঙ্গে ঈদ করতে। ঈদের পর ঢাকা যেতে পারি নাই। ঢাকায় আমার স্বামী চাকরি করে, বাড়ি থেকে বের হয়েছি স্বামীর সঙ্গে ঢাকা যামু। লকডাউন চলছে জানি। গাড়ি নাই। তারপরও বাচ্চাকে নিয়ে ট্রাকে উঠেছি। আল্লাহই জানে, যেতে পারমু কি না।’
এ প্রসঙ্গে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাইন উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। পুলিশ মাঠে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। ওখানে কীভাবে এটা ঘটল, দেখছি।
ত্রিশাল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে আমরা সর্বাত্মকভাবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে টহল অব্যাহত রয়েছে। আমরা যখন অন্য স্থানে যাই, তখন হয়তো পিকআপ এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েছে।