হোম > সারা দেশ > ময়মনসিংহ

‘বেতন বোনাস চাওয়ায়’ শ্রমিককে রাতভর নির্যাতন, ৭ দিন পর মৃত্যু 

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় ঈদের বেতন বোনাস চাওয়ায় এক চালকল শ্রমিককে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার ভোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সামিউল ইসলাম (২৬) নামের ওই চালকল শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। 

এর আগে, ২৯ এপ্রিল উপজেলার সরকার অটো ডায়ার রাইস মিলে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অটো রাইস মিলের ব্যবস্থাপক এনামুল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার বনকালী গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে সামিউল ইসলাম। বাকতা মাজুমতলী গ্রামের ‘সরকার অটো ডায়ার রাইস মিলে’ চাতাল শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। 

প্রায় এক যুগ আগে ফুলবাড়িয়া উপজেলার বাকতা আকন্দপাড়া গ্রামের মমিন মন্ডলের মেয়ে সাথী আক্তারকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে শ্বশুড় বাড়িতেই বাস করেন। এই দম্পতির সোহান (৬) ও আব্দুল্লাহ (৪) নামের দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। একই মিলে তাঁর শাশুড়ি মালেকা বেগম শ্রমিকদের রান্নাবান্নার কাজ করেন। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গত শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে রাইস মিলে কাজ করার সময় ঈদের বেতন বোনাসের দাবিতে মালিক পক্ষের সঙ্গে তর্কবির্তকে জড়িয়ে পড়েন সামিউল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাইস মিলের মালিক আবুল কালাম সরকারের ছেলে শরিফ মিয়াসহ ৭–৮ জন কর্মচারী নিয়ে সামিউলকে মিলের গুদাম ঘরে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে রাতভর নির্যাতন করেন। লোহাড় রড দিয়ে পিটিয়ে পা ও কোমড় ভেঙ্গে ফেলা হয়। রড গরম করে দুই পায়ে ছ্যাঁকা দেয়। নির্যাতনে একপর্যায়ে সামিউলের অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে ভোরে মিল মালিকের ছেলে শরীফ মিয়া সামিউলের শ্বাশুড়িকে জানায় তাঁর মেয়ের জামাইকে রাইস মিল থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। 

শ্বাশুড়ি ও দুই সন্তান নিয়ে স্ত্রী সাথী আক্তার অটো রাইস মিলে গেলে তাঁদের উপস্থিতিতেও লোহার রড দিয়ে সামিউলকে পেটাতে থাকেন। স্ত্রী সন্তানদের আকুতিতে সকালে তাঁর হাত পায়ের বাঁধন খুলে দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। 

ওই দিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপতালে সামিউলকে ভর্তি করা হয়। ঢাকায় রেফার্ড করা হলেও টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিতে পারেননি। 

নির্যাতনের ওই ঘটনায় সামিউলের স্ত্রী সাথী আক্তার বাদী হয়ে গত বুধবার ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় নির্যাতনের মূল অভিযুক্ত চালকলের মালিকের ছেলে শরীফ মিয়া ও ব্যবস্থাপক এনামুল হকসহ চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা কয়জনকে আসামি করা হয়। 

সামিউলের স্ত্রী সাথী আক্তার বলেন, ‘বেতন ও ঈদ বোনাস নিয়ে তর্ক করায় আমার স্বামীকে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করেন শরীফসহ তাঁর লোকজন। চোখের সামনে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে কোমর, পা ভেঙে ফেলা হয়। লোহার রড গরম করে ছ্যাঁক দেওয়া হয় দুই পায়ে। বুকের ওপর গরম চালের বস্তা রেখে দিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করেন মিলের মালিকের লোকজন।’ 

ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘নির্যাতনে আহত রইস মিলের শ্রমিক সামিউল চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় মিলের ব্যবস্থাপককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

ময়মনসিংহে নিহত দীপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক, স্ত্রীকে চাকরির আশ্বাস

পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন: গ্রেপ্তার ১২ আসামির ৩ দিন করে রিমান্ড

নড়বড়ে বাঁশে ঠেস দেওয়া ৪৮০ ভোল্টের খুঁটি

বিস্ফোরক মামলায় সাবেক এমপি সারোয়ার কারাগারে

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন: আরও ২ আসামি গ্রেপ্তার

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

দিপু চন্দ্রকে জোরপূর্বক চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়: র‍্যাব

ময়মনসিংহের নান্দাইল: নদীর জায়গা দখল করে আ.লীগ নেতার মার্কেট

দিপুকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশে আগুন