জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ধস্তাধস্তির পর এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে তিন নারীসহ সন্দেহভাজন পাঁচজনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
উপজেলার পার্থশী ইউনিয়নের রৌহেরকান্দা গ্রামে গতকাল শনিবার (১ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত সাদেক আলী মাস্টার (৭০) ইসলামপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক সহকারী শিক্ষক। তিনি পার্শ্ববর্তী ঢেংগারগড় সর্দার বাড়ি জামে মসজিদে ইমামতি করতেন।
ইসলামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান মোড়ল আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় হত্যার অভিযোগ তোলে গতকাল রাতে ১২ জনের নামোল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন সাদেক আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
ইতিমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন মৃত জয়নাল আহম্মেদের স্ত্রী গোলাপফুল বেগম (৭০), মিয়া উদ্দিনের স্ত্রী মোছা. নার্গিস (৫৫), নুর হোসেনের স্ত্রী মোছা. ফুলে (৩৭), মৃত রফিজ উদ্দিন শেখের ছেলে হযরত আলী (৬০) এবং মৃত ছয়ের আলীর ছেলে আশরাফ আলী (৪৮)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বসতবাড়ির আঙিনায় জমে থাকা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন করতে গেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আলীকে বাধা দেন আসামিরা। একপর্যায়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীন ফুলুর ছেলে রফিকুল ইসলাম দুখু এবং আসামিরা লাঠিসোঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাদেক আলীর মাস্টারের ওপর হামলা করেন। এ সময় আসামিদের কিলঘুষিতে গুরুতর আহত হন সাদেক আলী মাস্টার। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এ এম আবু তাহের বলেন, ‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আলীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।’
সাদেক আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ বলেন, ‘পূর্বশক্রতার জের ধরে প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম দুখু, নাচ্চু মিয়া, বাচ্চা শেখ, তোতা শেখ, লাজু শেখ ও জালাল শেখ গংদের সঙ্গে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আমার বাবাকে তাঁরা ধাক্কা দিয়ে কিলঘুষি মারে।’
আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
তবে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সাদেক আলী মাস্টার অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে কেউ মারেননি। তিনি দীর্ঘদিন থেকে হৃদ্রোগের জটিলতায় ভুগছিলেন।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘দিনে দুপুরে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি।’