জামালপুরের চরাঞ্চলে শীতকালীন সবজির বাগানে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এই মৌসুমে একদিকে অতিরিক্ত বৃষ্টি, অন্যদিকে খরার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সবজি গাছ মরে যাচ্ছে। কৃষকদের অভিযোগ, এই সময়ে কৃষি বিভাগের কোনো সহায়তা পাননি তাঁরা।
চরাঞ্চল শরিফপুর, বারুয়ামারি, লক্ষ্মীরচর, নান্দিনা নরুন্দিতে শীতকালীন সবজি হিসেবে লাউ, করলা, চিচিঙ্গা, টমেটো, মুলা, শিমসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করা হয়। এ বছর মৌসুমের শুরুতেই সবজি চাষে বিপর্যয় দেখা দেওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মাথায় হাত।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছর একদিকে অতিবৃষ্টি অন্যদিকে খরার ফলে চাষের সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতি বিঘায় ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বেশি দামে সার-কীটনাশক দিয়েও বাগান রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। গাছ মরে যাওয়ায় ফলন না আসায় লোকসানে পড়েছেন তাঁরা। এই সময়ে কৃষি বিভাগের কেউ তাঁদের পাশে থাকেনি।
চরভারুয়ারি গ্রামের সবজিচাষি কামাল মিয়া বলেন, ‘দাম বেশি হওয়ায় সবজিখেতে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে পারিনি। যে কারণে প্রায় সব গাছ মরে গেছে।’
কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, ‘অনেক টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ। সার-কীটনাশকের খরচের পাশাপাশি কামলা দিয়ে কাজ করাতে হয়। খেতে সারা দিনের অর্ধেক ফল ফেলে দিতে হচ্ছে। এবার অনেক টাকা লোকসানের মুখে পড়তে হবে।’
শীতের সবজি নিতে আসা পাইকার জামাল মিয়া বলেন, সারা দেশে জামালপুরের শীতের সবজির চাহিদা রয়েছে। চরাঞ্চলে সবজির বাগান নষ্ট হওয়ায় এবার চাহিদা অনুযায়ী সবজি মিলছে না। এ বছর বর্ষার কারণে ফলন কম হওয়ায় দাম বেশি। ফলে চাহিদা মতো পণ্য তাঁরা জেলার বাইরে পাঠাতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জামালপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বলেন, ‘এ বছর আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এই অঞ্চলের সবজিচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ব্লক সুপারভাইজাররা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁদের তালিকা তৈরি করে সরকারিভাবে সহায়তা করার জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’