বছর দেড়েক আগে হঠাৎই বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে খেতের ওপর। এতে বিদ্যুতায়িত হয়ে খেতের পানিতে থাকা মাছ মারা যায়। খবর পেয়ে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন গিয়ে উপড়ে পড়া খুঁটিটি বাঁশের ওপর ভর করে ঠেকিয়ে রেখে আসেন। দীর্ঘদিন যাবৎ এভাবেই বাঁশের খুঁটির ওপর ভর করে কাত হয়ে আছে বিদ্যুতের খুঁটিটি। যেকোনো সময় বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের চরপুবাইল গ্রামে (চরপুবাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন) বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) লাইনের একটি খুঁটি বাঁশের ওপর ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়ায় বাঁশের খুঁটিটি নরম হয়ে গেছে এবং পচন ধরেছে। এ অবস্থায় থাকলে যেকোনো সময় বাঁশের খুঁটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। একাধিকবার বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলেও বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
খুঁটির নিচের ধানখেতে কাজ করা মো. জামাল হোসেন ও মো. শফিকুল ইসলাম নামে স্থানীয় দুই যুবক বলেন, ‘খুঁটির নিচে ও আশপাশে আমাদের অনেকগুলো খেত রয়েছে। খেতে কাজ করার সময় খুব ভয়ে ভয়ে থাকি। প্রায় সময়েই ভাবি, এই বুঝি খুঁটি ভেঙে শরীরের ওপর পড়ল। খুঁটিসহ বিদ্যুতের লাইনের অনেক জায়গায় ভেতরের ছেঁড়া তার বের হয়ে আছে। একবার খুঁটি ভেঙে নিচে পড়লে অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এটি সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাসিন্দা এহসানুল করিম বলেন, ‘ঠিকমতো বিদ্যুতের খুঁটি না পোঁতায় প্রায় দেড় বছর আগে এটি উপড়ে পড়ে। এতে বিদ্যুতায়িত হয়ে খেতের পানিতে থাকা মাছসহ সমস্ত জলজ প্রাণী মরে যায়। পরে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন এসে বাঁশের ওপর বিদ্যুতের খুঁটিটি ঠেকিয়ে রেখে যান। তখন তাঁরা জানান, এটি সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য দেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন পর এসে খুঁটিটি ঠিক করে দেওয়া হবে। কিন্তু দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও অবহেলায় এভাবেই খুঁটিটি ঝুলছে।’
চরপুবাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাঁশ দিয়ে ঠেকানো বিদ্যুতের খুঁটি ও বিদ্যুৎ লাইনের নিচে স্থানীয় কৃষকেরা দিনভর কাজ করেন। গরু, ছাগলসহ গবাদি পশুপাখি চরান। শুধু তাই নয়, আশপাশের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও খুঁটির পাশের খেতের আইল দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। তাই এটি দ্রুত ঠিক না করা হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য লোকমান হোসেন বলেন, খুঁটিটি দীর্ঘদিন যাবৎ বাঁশের ওপর ঠেকানো অবস্থায় আছে। এটি সমাধানে বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
ঈশ্বরগঞ্জ আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) সৈকত মাহমুদ বলেন, ‘বিষয়টি সম্বন্ধে আমি অবগত ছিলাম না। জানলে আরও আগেই এটি সমাধান হয়ে যেত। এখন যেহেতু জেনেছি, সেহেতু দ্রুত লোক পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেব।’