নেত্রকোনা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিয়ের আসরে খাওয়া-দাওয়া চলছিল। হঠাৎ করে অনুষ্ঠানে হাজির হন দুই নারী। তাঁদের দাবি, তাঁরা বর সাজ্জাদ হোসেনের পুরোনো স্ত্রী। কিছুক্ষণের মধ্যে হাজির হয় পুলিশও। এরপর পণ্ড হয়ে যায় বিয়ের অনুষ্ঠান।
তবে বর সাজ্জাদের দাবি, স্ত্রী দাবি করা নারীদের একজনের সঙ্গে বিয়ে হলেও তাঁকে তালাক দেওয়া হয়েছে। আদালতে এ বিষয়ে মামলা চলছে। অপরজন স্ত্রী নন, কাছের আত্মীয়।
গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা শহরের কুরপাড় এলাকায় বিয়ে বাড়ি কমিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
সাজ্জাদ হোসেন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাখনা গ্রামের বাসিন্দা।
স্ত্রী দাবি করা দুজনের নাম পিয়া জাহান ও নওরিন হাসান নিসা। তাঁদের একজনের বাড়ি নেত্রকোনার মদন উপজেলায়, অন্যজনের খালিয়াজুরীতে। এ বিষয়ে নওরিন হাসান নিসা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘স্ত্রী থাকা অবস্থায় আরেকটি বিয়ের বিষয়ে এক নারীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা নিসা বলেন, ‘সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে গত বছরের ১ জুলাই আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নিয়মিত। কয়েক মাস আগে আমার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন সাজ্জাদ। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তাঁর (সাজ্জাদের) আগেরও এক স্ত্রী রয়েছে। তাঁর সঙ্গে মামলা চলমান রয়েছে। আজ মঙ্গলবার জেলা শহরের কুড়পাড় ‘বিয়ে বাড়ি’ কমিউনিটি সেন্টারে তাঁর আরেক বিয়ে চলছে। বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক আমি পুলিশ সুপারের কাছে বিয়ে বন্ধের জন্য লিখিত অভিযোগ দিই। পরে পুলিশ গিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। আমি তাঁর বিচার চাই।’
প্রথম স্ত্রী দাবি করা পিয়া জাহান বলেন, ‘সাজ্জাদের সঙ্গে আমার তিন বছর আগে বিয়ে হয়। এরপর থেকে আমরা একসঙ্গে ময়মনসিংহে ছিলাম। পরে তিনি বদলি হয়ে ধর্মপাশা চলে গেলে আমার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে। বছর খানেক আগে সে আরেকজনকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সেখানেও আমি উপস্থিত হয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিই। পরে শুনি সে তার আত্মীয় নিসাকে বিয়ে করে। এরপর আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলাটি চলমান রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সে আরেকজনকে বিয়ে করছে শুনে হাজির হই। পরে পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দিই।’
জানতে চাইলে বর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘পিয়া জাহানকে বিয়ে করার পর বনিবনা না হওয়ায় তালাক দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে আমার মামলা চলছে। বিষয়টি আমি আইনিভাবে মোকাবিলা করব। নিসা আমার আত্মীয়, তার সঙ্গে বিয়ে হয়নি। পারিবারিক দ্বন্দ্বে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলছে।’