ময়মনসিংহের ত্রিশালে অতিরিক্ত ওজনের লরি উঠে সেতু ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভালুকা সড়ক ও জনপথের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হালিম বাদী হয়ে লরির অজ্ঞাতনামা চালককে আসামি করে ত্রিশাল থানায় এ মামলা করেন।
গতকাল বুধবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলায় এনার্জি প্যাকের ট্রান্সফরমারবাহী ৪২ চাকার লরি উঠে সেতু ভেঙে যায়। এতে সড়ক বিভাগের ৩০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এনার্জি প্যাক ও পুলিশের দাবি দুর্ঘটনায় সড়ক ও জনপথ বিভাগেরও দায় রয়েছে।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার জন্য সড়ক বিভাগও দায়ী। ১৯৮৯ সালে নির্মিত সেতুটি দিয়ে কত টন ওজনের পরিবহন চলাচল করতে পারবে তা নির্দেশনা দেওয়া দরকার ছিল। সব বিষয় মাথায় রেখে ঘটনার তদন্ত করা হবে। আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে।’
মামলার নথির বরাত দিয়ে ওসি আরও বলেন, ‘বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে ট্রান্সফরমারবাহী ৪২ চাকার লরি ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী পাওয়ার গ্রিডে যাচ্ছিল। লরিটি ত্রিশালের চেলের ঘাট এলাকার স্টিলের সেতুর ওপরে উঠতেই সেতুর মাঝখানের একটি পাটাতন ভেঙে নিচে পড়ে যায়। একই সঙ্গে একটি প্রাইভেট কার নিচে পড়ে যায়। এতে প্রাইভেট কারে থাকা পাঁচজনের তিনজন যাত্রীই আহত হয়। ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় সরকারের আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে বি এম সাদ্দাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইন অনুযায়ী মহাসড়কের ওপর দিয়ে ৪০ টন ওজনের গাড়ি চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। তবে, লরির চালক সড়ক পরিবহনের কোনো আইন না মেনে এবং সড়ক বিভাগের কোনো অনুমতি না নিয়ে ১২০ টন ওজনের ট্রান্সফরমার নিয়ে সেতু পার হওয়ায় সেটি ভেঙে পড়ে। এতে সরকারি সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে।
এ বিষয়ে এনার্জি প্যাকের মাঠ কর্মকর্তা ইলিয়াস সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনায় শুধু আমাদের দায় দেখলে হবে না। অন্যান্য সময়ও আমরা এভাবেই ট্রান্সফরমার নিয়ে যাই। সড়ক ও জনপথ বিভাগ যদি ব্রিজের পাশে সাইনবোর্ড দিয়ে যান চলাচলে টন নির্ধারণ করে দিত, তাহলে আমাদের পুরোপুরি দায় থাকত। আমরা দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করব। আমাদেরও কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’