কলা চুরির অভিযোগে জামালপুরের ইসলামপুরে পিচ মোড়া বেঁধে শাওন মিয়া (১৬) নামে এক কলেজছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গুরুতর আহত ওই কলেজছাত্রকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের উজানপাড়া এলাকার আকরাম ঢালী নেদা মিয়ার ছেলে এবং উপজেলার বেলগাছা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যান্ড বিএম কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
এ ঘটনায় আজ সোমবার দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে ১০ জনের নামোল্লেখ করে ইসলামপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন–মোশারফগঞ্জ তেঘুরিয়া গ্রামের সামিউল মিয়ার ছেলে আজিম মিয়া (২০) এবং সুরুজ্জামানের ছেলে ফজলুর রহমান (৪৬)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত ৯টার দিকে মোশারফগঞ্জ বাজারে যায় শাওন মিয়া। সেখান থেকে তাকে মাছ ব্যবসায়ী সামিউল ইসলাম ডেকে পৌর এলাকার খালেদ মোশাররফ বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি মুরগির খামারে নিয়ে যায়। পরে সেখানে কলা চুরির অপবাদ দিয়ে জানালার গ্রিলের সঙ্গে পাসহ পিচ মোড়া দিয়ে বেঁধে শাওন মিয়াকে নির্যাতন করে সামিউলসহ তার লোকজন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, পাসহ পিচ মোড়া দিয়ে রশিতে বাঁধ অবস্থায় কলেজছাত্র শাওন মিয়াকে এক ব্যক্তি লাঠি দিয়ে বেদম পেটাচ্ছে। এ সময় শাওন মিয়া প্রাণে বাঁচার আকুতি করছে। পাশে কয়েকজন লোক নীরবে দাঁড়িয়ে ছিল।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাওন মিয়া বলেন, ‘ঘটনার দিন মোশাররফগঞ্জ বাজারে তারা আমাকে ফলো করছিল। আমাকে ডেকে নিয়ে কলা চুরির অপবাদ দিয়ে তারা এমন নির্যাতন করবে, সেটা আমারও জানা ছিল না। নির্যাতনের কথা কাউকে বলা হলে, তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। যার জন্য নির্যাতনের ঘটনাটি আমি কাউকে বলার সাহস করিনি।’
ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন তালুকদার বলেন, ‘কলেজছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্যাতনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্যাতনকারীদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মনে রাখতে হবে, কোনোক্রমে আইন নিজের হাতে তোলে নেওয়া যাবে না।’