ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রে অনিয়ম হলে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
তিনি বলেন ‘ইভিএমে অনিয়ম একেবারেই অসম্ভব, এটা বিজ্ঞানের বিষয়। এতে একজনের ভোট আরেকজনের প্রতীকে চলে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি তাই হতো তাহলে বিগত নির্বাচনগুলোতে জাতীয় পার্টিসহ অন্য প্রার্থীরা বিজয়ী হতো না।’
আজ বুধবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এসব কথা বলেন। পরে তিনি টাউন হলে সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।
মো. আলমগীর বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিধিমালা পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রার্থীদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। আগামীতে অ্যানালগ পদ্ধতি বাতিল করে প্রার্থীদের নমিনেশন পেপার সাবমিটসহ নির্বাচনের সব কার্যক্রম ডিজিটাল করতে আইন প্রণয়ন করা হবে।’
ইভিএম নিয়ে প্রার্থীদের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘ইভিএমে কীভাবে ভোট দিতে হয়, তা ভোটারদের জানাতে জেলা প্রশাসন ও তথ্য অফিসের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হবে। এমনকি নির্বাচনের দিন ভোটারদের লাইনেও বিষয়টি নিয়ে ধারণা দেওয়া হবে। ইভিএম শুধু ময়মনসিংহ নয়, এর আগে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা এবং ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হয়েছে।
এতে কোথাও সমস্যা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে আঙুলের ছাপে কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে থাকে, সে জন্য সঠিক ভোটার নিশ্চিত হলে ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। মোট কথা ইভিএম নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, বরং ভোটার উপস্থিতিই আসল বিষয়।’
নির্বাচনে প্রার্থীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত প্রসঙ্গে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কোন প্রার্থীর প্রতি অসম্মান আচরণ করার সুযোগ নেই। আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান সম্মানিত। জনগণ যাকে ভোট দেবে, তিনিই নির্বাচিত হবেন। এ ক্ষেত্রে কোন নির্বাচন কর্মকর্তা নিরপেক্ষ না হলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করুন। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়ার সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রায়হানুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (মসিক) মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩২ পুরুষ, ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫৫ নারী। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯ জন। তারা আগামী ৯ মার্চ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নগরীর ১২৮টি ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
এতে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী ছাড়াও নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ এবং ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী আছেন ৬৯ জন। তবে নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফরহাদ আলম কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ায় কাউন্সিলর পদে ৩২টি ওয়ার্ডে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।