নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের হাওরে সাইফুল ইসলাম (৪২) নামে এক যুবককে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ভোরে আসামির নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। এ সময় সাইফুলের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও জব্দ করা হয়।
আটকের নাম অন্তর আহমেদ শান্ত (২১)। তিনি জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের ছালিক মিয়ার ছেলে। হত্যার শিকার সাইফুল ইসলাম ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার কাশীপুর-বিশ্বাসপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে।
শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ডিঙাপোতা হাওর থেকে অজ্ঞাত হিসেবে সাইফুল ইসলামের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দুর্বৃত্তরা গলা কেটে হত্যার পর পোশাক খুলে আগুন জ্বালিয়ে তার মুখ পুড়িয়ে দেয়। পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা আঙুলের ছাপে পরিচয় শনাক্ত করে।
পুলিশ জানায়, সাইফুল ইসলাম ঢাকার মিরপুরে থেকে ভাড়ায় মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং করতেন। গত বুধবার সাইফুল ঢাকা থেকে তাঁর নিজের মোটরসাইকেল ভাড়ার চুক্তিতে মাসুক ও ফয়সাল নামে দুজন ব্যক্তিকে নেত্রকোনা নিয়ে আসেন। পরে রাতে অন্তরসহ আরও কয়েজন মিলে উপজেলার তেতুলিয়ার সামনের ডিঙাপোতা হাওরে নিয়ে সাইফুলকে গলা কেটে হত্যার পর পরনের কাপড়ে আগুন দিয়ে মুখ পুড়িয়ে দেয়। সকালে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পরে পিবিআইয়ের সদস্যরা আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করে।
এদিকে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রধান অভিযুক্ত শান্তকে আটক করে। এ সময় তার বাড়ি থেকে সাইফুলের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও জব্দ করে। জিজ্ঞাসাবাদে শান্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের নাম প্রকাশ করে।
পুলিশ আরও জানায়, শান্তসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যরা গত ১০ দিন ধরে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই করার জন্য পরিকল্পনা করে। পরে তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা থেকে ভাড়ার কথা বলে মোটরসাইকেলসহ সাইফুলকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের ডিঙাপোতা হাওরে নিয়ে আসে। গভীর রাতে হাওরে পৌঁছানোর পর আগে থেকেই সেখানে থাকা অন্য সঙ্গীদের নিয়ে সাইফুলকে গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর পরনের পোশাক খুলে আগুন লাগিয়ে তার মুখ পুড়িয়ে দেয় যেন পরিচয় শনাক্ত না করা যায়।
ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার পরপর রহস্য উদ্ঘাটনে নামে পুলিশ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের পাশাপাশি প্রধান আসামি শান্তকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শান্ত ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অন্য আসামিদের নাম বলেছে। অন্য আসামিদের আটকে অভিযান চলমান আছে।
তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে ঝিনাইদহ থেকে পরিবারের লোকজন এসেছেন। হত্যার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে।