জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ছয় আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এঁদের মধ্যে দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
চার দিনের রিমান্ড শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জামালপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তানভীর আহমেদ আসামিদের কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন। আসামিরা হলেন রেজাউল, মনির, গোলাম কিবরিয়া সুমন, মো. মলিন, মো. তোফাজ্জ্বল ও মো. আয়নাল হক।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসূফ আলী জানান, ছয় আসামির মধ্যে রেজাউল ও মনিরুজ্জামান বিচারকের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন। এরপর আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
১৮ জুন নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুসহ ১৩ জনকে আদালতে তোলা হলে বাবুর পাঁচ দিন, ছয় আসামির চার দিন ও ছয় আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আগামীকাল শুক্রবার মামলার প্রধান আসামি বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুর পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হবে।
১৪ জুন বুধবার জামালপুরের বকশীগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন সাংবাদিক নাদিম। রাত সাড়ে ১০টায় পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে পাটহাটি এলাকায় তাঁকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে প্রথমে কিলঘুষি এবং অন্ধকারে নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় ও বুকে আঘাত করে বাবু চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী। এ সময় হত্যার মাস্টার মাইন্ড ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু এবং তাঁর ছেলে রিফাত এই হামলার পরিকল্পনা ও নেতৃত্ব দেন। বাবু চেয়ারম্যানের ছেলে ইট দিয়ে নাদিমের মাথায় আঘাত করেন।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নাদিম মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে প্রথমেই রেজাউল নাদিমকে মোটরসাইকেল থেকে টেনে নামিয়ে মারধর করেন। পরে আরও ৮- ১০ জন দৌড়ে এসে মারধর করছেন। একপর্যায়ে তাঁকে অন্ধকারে নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এরপর নাদিমের এক সহকর্মী মোবাইল ফোন পেয়ে লোকজনসহ তাঁকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেন। ১৫ জুন বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীনবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় গত শনিবার নিহত সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০-২৫-কে অজ্ঞাত আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় পঞ্চগড় থেকে মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুসহ দুই সহযোগী গ্রেপ্তার হন। আর রেজাউলকে গ্রেপ্তার করা হয় বগুড়া থেকে। বাকি ১২ জনকে হত্যাকাণ্ডের পর বকশীগঞ্জ বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।