ভুয়া মামলায় ১১ দিন কারাগারে থাকার পর ময়মনসিংহের ত্রিশালের এক রিকশা চালককে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার বরগুনা আদালতে আবেদন করার পর এ আদেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ।
ভুক্তভোগী ওই অটোরিকশা চালকের নাম বুলবুল ইসলাম বুলু (৪০)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের জামতলী গ্রামে। পরিবারে পাঁচ ভাই আর চার বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার। অটোরিকশা চালিয়ে সারা দিন যা রোজগার করেন তাই দিয়ে চলে তাঁদের সংসার।
এ বিষয়ে বুলবুল ইসলামের আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু বলেন, ‘আমি আজ বরগুনা আদালতে বুলুর মুক্তির জন্য আবেদন করি। জেলা ও দায়রা জজ যাচাই-বাছাই করে দেখেন ওয়ারেন্ট ছিল ভুয়া। পরে মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেন আদালত। দু-এক দিনের মধ্যে মুক্তির আদেশ ময়মনসিংহের জেল সুপারের কাছে যাবে এবং বুলু মুক্তি পাবেন।’
জানা যায়, বরগুনা জেলায় দায়ের করা অস্ত্র মামলায় গত ২০ জানুয়ারি বাড়ির সামনে থেকে বুলবুলকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় ত্রিশাল থানা-পুলিশ। অভিযোগ, বরগুনা জেলার সদর থানার ২০১৮ সালের একটি অস্ত্র মামলার আসামি তিনি। অথচ স্বজনদের দাবি ময়মনসিংহ জেলার বাইরে কখনো কোথাও যাননি তিনি।
এদিকে বিনা অপরাধে ১১ দিন ধরে ময়মনসিংহে কারাভোগ করছেন তিনি। বরগুনা আদালতে কোনো মামলা নেই মর্মে জানানো হলেও, বুলবুল মুক্তি পাননি বলে অভিযোগ পরিবারের। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি কারাগারে থাকায় দিশেহারা ভুক্তভোগীর পরিবার।
বুলবুলের মেজো ভাই সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমাদের জানামতে এমন কোনো শত্রু নাই যে তারা এত বড় একটা মামলা দেবে। এ নিয়ে বরগুনা আদালতে আমরা যোগাযোগ করেছি, কিন্তু মামলার কোনো নথি পাইনি। এ ব্যাপারে সেখান থেকে যে কাগজ দিয়েছে এটি যে কাকে দেখালে কাজ হবে এটাও বুঝতে পারছি না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ বলেন, ‘আমরা আমাদের রেজিস্ট্রারপত্র পর্যালোচনা করে দেখেছি ২০১৮ সালের ১৭ নম্বর মামলাটি কোনো অস্ত্র আইনে করা নেই। ওই ব্যক্তির নামে যেহেতু অস্ত্র আইনে কোনো মামলাই হয়নি সুতরাং এখানে তদন্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই।’
এ ব্যাপারে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘ওয়ারেন্ট থাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে আসামিকে। বাইরের জেলা থেকে যে সমস্ত ওয়ারেন্ট আসে সেগুলো সাধারণত প্রথমে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যায়। সেখান থেকে তা কোর্ট ইন্সপেক্টরের কাছে পাঠানো হয়, তারপর প্রক্রিয়া মোতাবেক আমাদের কাছে আসে। পরে আমরা ওই আসামিকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করি।’