হোম > সারা দেশ > ময়মনসিংহ

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে বন্যা

শেরপুর প্রতিনিধি

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে শেরপুরের দুই উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই এবং চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর বাঁধ ভেঙে ও পাড় উপচে দুই উপজেলার অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে বেশ কিছু বাড়ি-ঘর। দুর্ভোগে রয়েছেন পানিবন্দীরা। 

জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে শেরপুরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। সঙ্গে ভারত থেকে নেমে আসছে পাহাড়ি ঢল। আজ শুক্রবার ভোর থেকেই পানি বাড়তে থাকে। ঝিনাইগাতী উপজেলার রামেরকুড়া ও খৈলকুড়া ব্রিজপাড় এলাকায় মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। প্লাবিত হয় সদর উপজেলার বাজারসহ নিম্নাঞ্চল। বেশ কিছু বাড়িঘর পানিতে ভেসেও গেছে। 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য মতে, নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও ভোগাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর অন্তত পাঁচ জায়গায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। প্রতি বছর পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী প্লাবিত হয়। চলতি বছর দুই দফায় ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হলো উপজেলাবাসী। 

ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর বাজারের ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, প্রতি বছরই পাহাড়ি ঢলের পানিতে তাঁদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। মহারশি নদীর বাঁধ দুর্বল হওয়ায় তা ভেঙে বাজারসহ নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে। দ্রুত এই নদীতে বেড়িবাঁধ চান তাঁরা। 

ওই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী মো. আবু বকর বলেন, আমাদের দোকানপাটে পানি উঠেছে। অনেক ব্যবসায়ীর ক্ষতি হয়েছে। প্রতি বছরই নদীর বাঁধ ভাঙে আর আমাদের ক্ষতি হয়। কেউ এদিকে দেখে না। নদীর স্থায়ী বাঁধ চাই আমরা। 

স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান আলী বলেন, ‘এর আগে এ রকম পানি দেখি নাই। আমাদের বাড়ি-ঘরে পানি। রান্না করতে পারছি না। রাস্তায় পানি ওঠায় চলাচলও করতে পারছি না। খুব কষ্টে আছি।’ 

এদিকে আমন ধানের খেত ডুবে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। কৃষক ফজলু মিয়া বলেন, ‘আমাদের সব ফসল পানির নিচে। এই ধান এহন খাইয়া গেলেগা আমরা বাঁচমু কেমনে।’ 

ঝিনাইগাতী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলমান পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে ঝিনাইগাতী উপজেলার অন্তত সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমির ফসল পুরোপুরি এবং পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। ঢল অব্যাহত থাকলে জেলার আমন আবাদের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। 

ঝিনাইগাতী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন দিলদার বলেন, এ বছর ঝিনাইগাতীতে সাড়ে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমি সম্পূর্ণ ও সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমির ধানের আবাদ আংশিক তলিয়েছে। দ্রুত পানি নেমে না গেলে অনেক ক্ষতি হবে। 

এদিকে ঢলের পানিতে নালিতাবাড়ী পৌর শহরের নিম্নাঞ্চল, শিমুলতলা, ঘাকপাড়া, মন্ডলিয়াপাড়া ভজপাড়া ও সন্নাসীভিটা, বাতকুচি এলাকায় ভোগাই এবং চেল্লাখালীর বাঁধ ভেঙেছে। নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে শেরপুর-নালিতাবাড়ী ভায়া গাজীরখামার সড়ক। 

রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা। বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় রান্না করতে পারছেন না। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। 

মহারশি নদীতে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে ফিজিবিলিটি প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়েছে বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙনকবলিত বাঁধ মেরামতের কাজ দ্রুত কাজ শুরু হবে। আর বাঁধের স্থায়ী সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। 

শেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দুই উপজেলার অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে নৌকা নিয়ে আসা হচ্ছে। বন্যাকবলিতদের জন্য শুকনো খাবার রেডি করা হচ্ছে। রাতের মধ্যেই সেগুলো পৌঁছে দেওয়া হবে।

ময়মনসিংহে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

বকশীগঞ্জে বিয়ের ১৮ দিনের মাথায় নববধূর লাশ, শাশুড়ি আটক

ময়মনসিংহে ৩৬ থানা–পুলিশের কার্যক্রম সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং

বাবরকে বরণে তোরণ-ফেস্টুনে সেজেছে হাওরাঞ্চল

তাবলিগ জামাতের সংকট নিরসনে শিক্ষার্থীদের ৩ প্রস্তাব

জামালপুরে আইনজীবীর জামিন নামঞ্জুর, আদালত প্রাঙ্গণে হট্টগোল

ময়মনসিংহে মাজার ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দাবি

ভালুকায় শিশুর গলায় ‘দা’ ঠেকিয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

ময়মনসিংহের কালু শাহ মাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি

নান্দাইলে খেলতে গিয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

সেকশন