সাপাহার (নওগাঁ): নওগাঁর সাপাহার উপজেলার একটি ছাত্রাবাস থেকে সুমি খাতুন (১৮) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা–পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে সাপাহার ক্যাডেট স্কুলপাড়ায় সৌদি মসজিদের পাশের মাতৃছায়া ছাত্রাবাস থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত গৃহবধূর বাড়ি পত্নীতলা উপজেলার দিবর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আলী হোসেন এবং তিনি পাতাড়ী উত্তরপাড়ার সেলিম রেজার (২৫) স্ত্রী।
স্বজন, স্থানীয় ও পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পারিবারিকভাবে পাতাড়ী উত্তরপাড়া গ্রামের তফিজুল রহমানের ছেলে সেলিম রেজার সঙ্গে বিয়ে হয় সুমির। বিয়ের পর থেকে সুমি গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে এবং তাঁর স্বামী সেলিম রেজার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে সাপাহার সদরের ওই ছাত্রাবাসে ভাড়া থাকতেন। করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্রাবাসে একা থাকতেন সেলিম। কিছুদিন আগে সুমি তাঁর বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। পরে সেলিম তাঁর শ্বশুরকে ফোন করে স্ত্রী সুমিকে বাড়িতে পাঠানোর জন্য সাপাহার সদরে পৌঁছে দিতে বলেন। সুমির বাবা সুমিকে সাপাহার জিরো পয়েন্ট এলাকায় জামাইয়ের কাছে পৌঁছে দেন। পরে সেলিম স্ত্রীকে ছাত্রাবাসে নিয়ে যান। পর দিন সেলিম তাঁর শ্বশুরকে মুঠোফোনে ফাঁস দিয়ে সুমির মারা যাওয়ার বিষয়টি জানান।
ঘটনা শোনার পর সেখানে সুমির স্বজনেরা ছুটে আসেন। কিন্তু কৌশলে সেলিম সেখান থেকে চলে যান। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল বুধবার রাতে ছাত্রাবাসের রান্নাঘর থেকে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সুমির মরদেহ উদ্ধার করে।
সুমির বাবা আলী হোসেন বলেন, `গতকাল দুপুরে আমি নিজে আমার জামাইয়ের কাছে মেয়েকে রেখে গেলাম। বিকেলে জামাই জানাল আপনার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে।' তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমার ধারণা, কেউ তাঁকে হত্যা করার পর লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে।'
এ ব্যাপারে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাপাহার থানার ওসি তারেকুর রহমান সরকার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে, এটা আত্মহত্যা কি-না। এ ঘটনায় তাঁর বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন।