চাঁপাইনবাবগঞ্জ (রাজশাহী): আমের জন্য বিখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জকে আমের রাজধানী হিসেবেই চেনে মানুষ। আর এই সুস্বাদু আম দেশের সীমানা ছাড়িয়ে এবার ইংল্যান্ডে রপ্তানি হচ্ছে। এর আগে ২০১৬ সালে বিভিন্ন দেশে ফজলি, ল্যাংড়া, হিমসাগর ও আম্রপালি আম রপ্তানি হয় প্রায় ১৮৬ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমে প্রথম গত ৫ জুন আড়াই মেট্রিক টন হিমসাগর আম রপ্তানি করেছেন ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক আহসান হাবিব।
আজ রোববার সকালে সরেজমিনে শিবগঞ্জ উপজেলার কালুপুর গ্রামের আহসান হাবিবের আম বাগানে গিয়ে দেখা যায়, তিনি বিদেশে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করছেন আরও দুই মেট্রিক টন আম। বৃষ্টির দিনে বাগানে ঘর তুলে প্যাকেটিং করছেন হিমসাগর জাতের আম। তিনি বিদেশে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করেছেন ২০ জাতের আম।
আহসান হাবিব বলেন, 'সাধারণ আম চাষিদের চেয়ে আমাদের আম স্বাদে ও গুনে ভিন্ন। কোন ক্রেতা একবার আম কিনলে, পরের বছর পাঁচ গুন বেশি আম কিনে থাকেন। শুধু তাই নয়, উনি আরও কয়েক গুন ক্রেতা পাঠিয়ে দেন বাগানে।'
আহসান হাবিব আরও জানান, শতভাগ নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও ফ্রুট ব্যাগিংকৃত আম, কোন প্রকার আঘাত ছাড়াই বোটাসহ নামাই এবং প্রতিটি আমে নিজস্ব স্টিকার লাগিয়ে পরিবহনে আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেট করে সরবরাহ করে থাকি। এ ছাড়াও বাগানে জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়। যা স্বাস্থ্যর জন্য কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। আমাদের উৎপাদিত আম রপ্তানির সকল নিয়ম মেনে তৈরি করা হয়। শনিবার ২ মেট্রিক টন হিমসাগর আম রপ্তানির জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রোববার বিমানযোগে আমের এ চালান যাবে সুইডেনে। এ ছাড়া রোববারের পাঠানো আম যাবে সোমবার।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ফ্রেশ ফুড ট্রেডিং কোম্পানির প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম জানান, তাঁরা তিন বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন বাগান হতে আম সংগ্রহ করে ইউরোপ, কানাডা, সুইডেনসহ বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে থাকেন। সে ক্ষেত্রে তারা পিউর আমগুলোই ক্রয় করেন। এবারও টার্গেট রয়েছে পুরো মৌসুমজুড়ে আম রপ্তানি করার।
লন্ডনে আম পাঠানোর ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি বিভাগের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, বিদেশে আম পাঠানোর জন্য কৃষি বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা করছে। তিনি জানান, ফ্রুট ব্যাগিং ব্যবহারের ফলে রপ্তানিযোগ্য ও সম্পূর্ণ কেমিক্যালমুক্ত আম উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে আগামীতেও রপ্তানিনীতি ব্যাপক সাফল্য পাওয়া যাবে।