তিন দিনের ব্যবধানে সামিউর রহমান নামে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) আরও এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে নগরীর সাধুর মোড়ের একটি ছাত্রাবাসের কক্ষ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে আগের জনের মতো এই শিক্ষার্থীও আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সামিউর রহমান (২২) রুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ সিরিজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। মহানগরীর সাধুর মোড় এলাকায় রহিমা লজ নামের একটি ছাত্রাবাসে থাকতেন। তিনি ঢাকার ধানমন্ডি নর্থ রোডে মৃত আবদুর রহমান সরকারের ছেলে।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, গতকাল রাতে ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা সামিউরকে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে থানায় সংবাদ দেন। পরে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পায়। এ সময় রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহযোগিতায় দরজার তালা ভেঙে সামিউরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
ওসি আরও বলেন, ‘এটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। দুই দিন আগে সামিউর ঢাকার বাড়ি থেকে রাজশাহী এসেছেন। তারপর কেন আত্মহত্যা করেছেন সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে। এ নিয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। আর ময়নাতদন্ত শেষে রোববার তাঁর বড় ভাইয়ের কাছে সামিউরের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। সামিউরের বড় ভাইও রুয়েটের শিক্ষার্থী ছিলেন।’
এর আগে ১৭ মে রুয়েটের ছাত্রাবাস থেকেই তানভীর আহমেদ (২৪) নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। সহপাঠীরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮ সিরিজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
পুলিশ জানায়, তদন্ত থেকে জানা গেছে, তানভীর আহমেদ সম্প্রতি রুয়েটের কয়েকটি পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন। প্রকৌশল পড়াশোনা করলেও তাঁর মন পড়ে থাকত সাহিত্যে। তিনি লেখালেখি করতেন। এবার বইমেলায় তাঁর একটি বইও বেরিয়েছিল।
এদিকে, দুই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা করার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে রুয়েট কর্তৃপক্ষকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. রবিউল আউয়াল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের ভাবাচ্ছে। এ বিষয়ে আগামীকাল (সোমবার) উপাচার্য একটি সভা ডেকেছেন। সেখানে অন্য বিষয়ের সঙ্গে এটিও গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হবে। কীভাবে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা যায় সে বিষয়টি দেখা হবে।’