উজানের পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বেড়েই চলছে। যমুনার পানি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর ও শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে অভ্যন্তরীণ করতোয়া, ফুলজোড়, বড়াল, হুড়াসাগর, ইছামতী নদীসহ চলনবিলে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে ভাঙনও অব্যাহত রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল সোমবার বেলা ১২টা থেকে আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত) যমুনা নদীর পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে অভ্যন্তরীণ নদী করতোয়া, ফুলজোড়, বড়াল, হুড়াসাগর, ইছামতী নদীসহ চলনবিলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বন্যা কবলিত মানুষ অনেকেই বাঁধ ও উঁচু স্থানে নির্মাণাধীন ভবন ও খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই নিচ্ছেন।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, যমুনার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২২ ও ২৩ জুন পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর পানি কমবে। এখনো বন্যার আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।
এদিকে যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজীপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে বন্যায় ভাঙন রোধসহ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি রয়েছেন বলে নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এডিসি জেনারেল মনির হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন সরকার, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা ইয়াসমিন, ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার, চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মজনু মিয়াসহ প্রমুখ।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, বন্যার্তদের জন্য এরই মধ্যে ৯১১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২০ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলো বিতরণের জন্য স্ব-স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী বিতরণ করা হবে।