সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট। মেয়ের হাত চেপে এক বৃদ্ধা ভোট কেন্দ্রে এসে লাইনে দাঁড়ালেন। পাশে দাঁড়ানো ভোটার, সংবাদকর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর সেই বৃদ্ধার দিকে। তাঁর নাম জরিনা বেগম। বয়স ৭৫ ছুঁই ছুঁই। বার্ধক্যে শরীরটা কুঁজে গেছে ঠিকই, কিন্তু ভোট উৎসবে শামিল হওয়ার ইচ্ছাটা ঠিক আগের মতোই রয়েছে তাঁর। তলিকায় নাম খুঁজে তাঁকে পাওয়া গেলেও বিপত্তি দেখা গেল তিনি ভোট দিতে গিয়ে। তাঁর আঙুলের ছাপ চিহ্নিত করতে পারেনি ভোটিং যন্ত্র ইভিএম। ফলে ভোট না দিয়েই ফিরে যেতে হলো জরিনা বেগমকে।
আজ সোমবার এই ঘটনা ঘটেছে নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের মালঞ্চী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। জরিনা বেগমের বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাতকুন্ডু গ্রামে।
স্থানীয়রা জানান, নিজের ইচ্ছে থেকেই মেয়ে মইফুলকে সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলেন জরিনা। তবে ভোট না দিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কারণ হাতের আঙুলের কারণে মেশিনে নির্দেশনা না আসায় ইভিএমে ভোট না দিয়েই বাড়িতে ফিরে যেতে হয়েছে তাঁকে।
ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে না পেরে জরিনা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ সকালে অনেক আশা করে ভোট দিতে এসেছিলাম। ওইখানে ওরা আঙুলের ছাপ নেওয়ার জন্য চেষ্টা করল, কিন্তু ভোট দিতে পারিনি। ব্যালট পেপারে হলে ভোট দিতে পারতাম।’
এ বিষয়ে মালঞ্চী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পুরুষ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন, ‘জরিনা বেগমের আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোট নেওয়া সম্ভব হয়নি। অনেক চেষ্টার পরও কোনোভাবেই তাঁর আঙুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এ জন্য তাঁর ভোটগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।’
নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউল হক খান বলেন, ‘বয়সের কারণে আঙুলের ছাপ নিতে এমনটি হয়ে থাকতে পারে। তবে ইভিএম এর সমস্যার কারণে ভোট দিতে সমস্যা হচ্ছে কিনা সেটিও দেখা হবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে।’
উল্লেখ্য, উপজেলায় ষষ্ঠ ধাপে মোট ৮টি ইউনিয়নে মোট ৯০টি কেন্দ্রে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে।