রংপুর প্রতিনিধি
ছেলে ও পুত্রবধূ চাকরি করায় নাতনিদের দেখভালের দায়িত্ব সন্ধ্যা রানীর। গরম বেড়ে যাওয়ায় নাতনিদের পাতলা জামা কিনে দেওয়ার জন্য টাকা ছেলের কাছ থেকে নেন সন্ধ্যা রানী। সকালের খাবার শেষে নাতনিদের নিয়ে রংপুরের তারাগঞ্জ বাজারে যাচ্ছিলেন জামা কিনতে। কিন্তু কেনা আর হলো না। মাইক্রোবাসের ধাক্কায় পথেই প্রায় হারিয়েছেন সন্ধ্যা রানী।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন সন্ধ্যা রানীর দুই নাতনিসহ চারজন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের হাড়িকাটা গ্রামের দম্পতি সন্তোষ রায় ও অনিকা রানীর কোল জুড়ে তিন বছর আগে যমজ জন্ম হয় অনুপম রানী ও অনু রানীর। এ দম্পতি চাকরি করায় অনুপম ও অনুর দেখভালের দায়িত্ব পড়ে বৃদ্ধা দাদি সন্ধ্যা রানীর ওপর। আজ সকাল ১০টায় নিজ বাড়ি হাড়িকাটা গ্রাম থেকে রিকশাভ্যানে করে দুই নাতনিকে নিয়ে সন্ধ্যা রানী তারাগঞ্জ বাজারে নাতনিদের জন্য জামা কেনার উদ্দেশ্যে বের হন।
রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক দিয়ে রিকশাভ্যানটি উপজেলা পরিষদের সামনে এলে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দিনাজপুরগামী একটি মাইক্রোবাস তাঁদের রিকশাভ্যানটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান সন্ধ্যা রানী। এ সময় শিশু অনুপম রানী, অনু রানী, যাত্রী ময়না রানী (৩৪) ও রিকশাভ্যান চালক ডালিম রায় গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করান।
সন্ধ্যা রানীর ছেলে সন্তোষ রায় বলেন, মেয়েদের দেখভাল মা করতেন। আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আজ মেয়েদের নিয়ে তারাগঞ্জ বাজারে কাপড় কিনতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু মাইক্রোবাস মায়ের প্রাণ কেড়ে নিল। আমরা এর বিচার চাই।
তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান শরিফুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন বৃদ্ধা নিহত হয়েছে। মাইক্রোবাসটি তারাগঞ্জ চৌপথী এলাকায় রেখে চালক পালিয়ে গেছেন। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া রিকশাভ্যান ও মাইক্রোবাসটি পুলিশের হেফাজতে আছে।