রংপুরের বদরগঞ্জ পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র হক সাহেবের মোড় থেকে স্টেশন সড়ক এবং শহীদ মিনার থেকে থানা সড়কের এক পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন জনসাধারণ। ঈদ সামনে রেখে কেনাকাটায় বের হওয়া মানুষজন সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রেন নির্মাণের জন্য রাস্তার পাশে খুঁড়ে রাখায় পৌরবাসীসহ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মানুষ পৌর শহরে কেনাকাটা করতে এসে পড়ছেন চরম দুর্ভোগে।
বদরগঞ্জ পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ‘হক সাহেবের মোড় থেকে রেলস্টেশন, পুরোনো সোনালী ব্যাংক থেকে টিঅ্যান্ডটি অফিস, মিতা সিনেমা হল থেকে থানার চারমাথা ও শহীদ মিনার থেকে পুরোনো সোনালী ব্যাংক পর্যন্ত সড়কের পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত বছরের ২৯ অক্টোবর। হক সাহেবের মোড় থেকে স্টেশন পর্যন্ত ৬১ লাখ ৩৭ হাজার ২৪৩ টাকার ড্রেন নির্মাণকাজ পান মেসার্স লালবাড়ী কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী লিংকন চৌধুরী। তিনি স্থানীয় সাবেক এমপি ডিউক চৌধুরী ও সাবেক পৌর মেয়র টুটুল চৌধুরীর বড় ভাই। পুরোনো সোনালী ব্যাংক থেকে টিঅ্যান্ডটি অফিস, মিতা সিনেমা হল থেকে থানার চারমাথা ও শহীদ মিনার থেকে পুরোনো সোনালী ব্যাংক পর্যন্ত ৮৪ লাখ টাকায় ড্রেন নির্মাণকাজ পান ইফতি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী দ্বীপ সরকার। কার্যাদেশ দেওয়া হয় গত ৫ ফেব্রুয়ারি। কাজের মেয়াদ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত। গত সপ্তাহে তাঁরা ড্রেন নির্মাণকাজ শুরু করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ধীরগতিতে এ নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। এদিকে ঈদের আগমুহূর্তে এসে কাজ শুরু করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, ঠিকাদার লিংকন চৌধুরী দুই ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়ে পৌর শহরের বেশির ভাগ কাজ একাই করতেন। গত ৫ আগস্টের পর ওই দুই ভাইয়ের সঙ্গে তিনিও আত্মগোপনে চলে যান। তাঁর ড্রেন নির্মাণকাজটি কিনে নিয়ে করছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বাদল।
পৌর শহরের কাপড় ব্যবসায়ী অলিউর রহমান বলেন, পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র হওয়ায় এমনিতেই যানজট লেগে থাকে। কিন্তু ঈদবাজারে সেখানে ড্রেন নির্মাণকাজ শুরু করায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘গর্ত করে মাটির স্তূপ রাখায় ঈদে ব্যবসায় ধস নেমেছে।’
জানা গেছে, সোম ও বৃহস্পতিবার হাট বার। অন্যান্য দিনের তুলনায় হাটের দিন ৩-৪ গুণ মানুষের পথচারণ হয় পৌর শহরে।
বিএনপির নেতা বাদল বলেন, ‘মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজ কিনে নিয়ে করছি। শহরের মধ্যে মানুষের চলাচলের কারণে কাজ দ্রুতগতিতে হচ্ছে না। আরও সময় লাগবে। উন্নয়নের স্বার্থে দুর্ভোগ
মেনে নিতে হবে।’
পৌরসভার প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন বলেন, ‘উন্নয়নকাজ থেমে থাকবে না, ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে মানুষের উপকারের জন্য। এ কারণে তাঁদেরকে দুর্ভোগ মেনে নিতে হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘দুদিন আগে ড্রেনের পাশে মাটি স্তূপ করে রাখায় আরও যানজট ছিল। আমি সেগুলো সরানোর নির্দেশ দিয়েছি।’