নীলফামারী ও সৈয়দপুর প্রতিনিধি
আন্তর্জাতিক সোনা চোরাচালান চক্রের সদস্য নীলফামারীর জাভেদ আকতারকে (৩৫) দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার সিএমএম আদালতে তাকে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানা–পুলিশ। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার এসআই আজহারুল ইসলাম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জাভেদ আকতারকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ (সোমবার) তাকে সিএমএম আদালতে নেওয়া হয়। বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’
এর আগে গত শনিবার রাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানার একদল পুলিশ সৈয়দপুরে আসে। পরে স্থানীয় থানা–পুলিশের সহায়তায় শহরের ইসলামবাগ সেরু হোটেল এলাকা থেকে জাভেদ আকতারকে আটক করে তারা।
জাভেদ আকতার সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়ার মো. জামিল আক্তারের ছেলে। এলাকার মানুষ তাকে সাংবাদিক হিসেবে জানে। পাসপোর্টে তার ঠিকানা সৈয়দপুর পৌরসভার নতুন বাবুপাড়া উল্লেখ করা হলেও তিনি শহরের ইসলামবাগ সেরু হোটেল এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন।
সূত্রমতে, গত ১৬ আগস্ট জিয়াউল ইসলাম (৫৮) নামে এক ব্যক্তি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর পুলিশের হাতে আটক হন। এ সময় তার ব্যাগে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ১২টি স্বর্ণবার পাওয়া যায়। যার ওজন ৫ কেজি ৯৮০ গ্রাম। যার বাজারমূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা। তার বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ধলাগাছ এলাকায়।
পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এরপর ২৭ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন জিয়াউল ইসলাম। তিনি এ চক্রের মূল হোতা হিসেবে জাভেদ আকতারের নাম বলেন।
গ্রেপ্তার জিয়াউল ইসলামের ছেলে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমার বাবার মেরুদণ্ডের হাড়ের সমস্যা ছিল। জাভেদ আকতার বাবাকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার প্রলোভন দিয়ে পাসপোর্ট ও ভিসা করে দেন। আমাদের না জানিয়েই বাবাকে তিনি সিঙ্গাপুরে পাঠান। পাসপোর্টে বাবার মোবাইল নম্বরের পরিবর্তে কৌশলে জাভেদ আকতারের নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। যা আমি বিমানবন্দর থানায় গেলে জানতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবা একজন সহজ-সরল মানুষ। তিনি বৃদ্ধ ও অসুস্থ। জাভেদ আকতার বাবাকে ফাঁসিয়েছে।’
ইসলামবাগ সেরু হোটেল এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘জাভেদ আকতারের নির্দিষ্ট কোনো পেশা ছিল না। কখনো তিনি স্ক্রিন প্রিন্টের মালামাল ব্যবসায়ী, কখনো নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। কিছুদিন আগে তার মা হাসিনা খাতুন, স্ত্রী মোছা আরজু ও শাশুড়ি শামিমা খাতুন সিঙ্গাপুর বেড়াতে গিয়েছিলেন। মূলত জাভেদ আক্তার এদের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে অবৈধভাবে স্বর্ণ চোরাচালানের কাজ করেন।’