মাছ ধরা নিয়ে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার লোহাকুচি সীমান্তে। ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে সীমান্তে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। এতে তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মাধব চন্দ্র নামে এক কৃষককে গুরুতর অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার লোহাকুচি সীমান্তের ৯১৯ নম্বর পিলারের কাছে এই মারামারির ঘটনা ঘটে। তবে চুরি যাওয়া মাছ ফেরত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকেরা বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার লোহাকুচি সীমান্তের ৯১৯ নম্বর পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মালদা নদীতে অনেক দিন ধরে মাছ ধরার টেপাই (বাঁশের তৈরি ফাঁদ) বসান বাংলাদেশি কৃষক মাধব চন্দ্র। কিন্তু ভারতীয় নাগরিকেরা সেই মাছ গোপনে তুলে নিয়ে যায়। এ নিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক করলেও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে তারা আবারও মাছ নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করলে বাংলাদেশি কৃষক মাধব চন্দ্রকে মারধর করে ভারতীয় লোকজন। একপর্যায়ে তাঁকে উদ্ধারে এগিয়ে এসে স্ত্রী গৌরী সেন ও তাঁর ছেলে জয় রায় আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় মাধব চন্দ্রকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই সীমান্তে মানুষজন জড়ো হতে শুরু করে। একপর্যায়ে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ভারতীয়দের একটি গরু বাংলাদেশের সীমান্তে নিয়ে এলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। খবর পেয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে ওই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পরে দুপুর ১২টার দিকে দুই দেশের মধ্যে পতাকা বৈঠক ডাক বিএসএফ ও বিজিবি। পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে চুরি করা মাছ ফেরত দিয়ে প্রকাশ্যে ভারতীয় নাগরিকেরা বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মাধব চন্দ্রের স্ত্রী গৌরী সেন বলেন, ‘বাংলাদেশি মানুষদের কাছে ভারতীয়রা ক্ষমা চেয়েছে বলেই উত্তেজনা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে আমার স্বামীকে যারা মারধর করেছে এর বিচার চাই। অসুস্থ হয়ে আমার স্বামী বর্তমানে হাসপাতালে রয়েছে। তার চিকিৎসার দায়িত্বে এখন কে নেবে?’
গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রশিদুল ইসলাম বলেন, বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করা হয়েছে। ভারতীয় নাগরিকেরা বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিজিবির লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদি হাসান বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় দুই পাড়ের নাগরিকদের মাঝে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল। তা দ্রুত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।