ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে পুলিশ হেফাজতে আকরাম হোসেন নামে (৪০) এক যুবদল নেতা মারা গেছেন।
আজ সোমবার বেলা ১টার দিকে মৃত অবস্থায় হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নেওয়া হয় তাঁকে। পুলিশের দাবি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন ওই যুবদল নেতা। তবে চিকিৎসকের দাবি হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে আকরাম হোসেনের মৃত্যু হয়।
আকরাম হোসেন হরিপুর উপজেলার হাটপুকুর গ্রামের আব্দুল তোয়াব আলীর একমাত্র ছেলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো.শামীমুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে আকরাম হোসেনের মৃত্যু হয়।’ কী কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে জানতে চাইলে এ চিকিৎসক বলেন, ‘পোস্টমর্টেম না করা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’
এদিকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮-এর ৩৬(১) সারণী ২৯ (ক)/৪১ ধারায় আকরাম হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর আজ আদালতে নেওয়ার পথে শারীরিক অসুস্থতা বোধ করে। পরে তাঁকে তাৎক্ষণিক হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মৃত্যু বরণ করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে জানান আকরাম হোসেন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন।
পুলিশ সুপারের এই বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো.শামীমুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোনো মন্তব্য করিনি। পোস্টমর্টেম না করা পর্যন্ত আমরা মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বলতে পারবে না।’
নিহতের চাচাতো ভাই সেখ সাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ভাইকে গতকাল রাত ৯টার দিকে হাটপুকুর এলাকা থেকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।’
নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম আর্তনাদ করে বলেন, ‘আমার স্বামী সুস্থ অবস্থায় বাড়ি থেকে বাজারে গিয়েছিল। পথে শুনছি পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই।’
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আকরাম হোসেন হরিপুর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সদস্যসচিব। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এমন মৃত্যু একটি স্বাধীন সভ্য দেশে হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ সুপার পোস্টমর্টেম করার আগে কীভাবে জানেন তার মৃত্যু হৃদ্রোগে হয়েছে? এর জন্য দায়ী পুলিশ এবং পুলিশকে এটির কৈফিয়ত দিতে হবে আজ অথবা আগামীকাল।’
এ বিষয়ে জানতে হরিপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ শেখের মোবাইল ফোনে একাধিবার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।