ঈদের ছুটি শেষে যাত্রীদের চাপ থাকলেও লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে ট্রেনে অতিরিক্ত বগি না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ। আজ শনিবার বুড়িমারী স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এ সময় টিকিট সংগ্রহ করেও অনেকে ট্রেনে উঠতে পারেননি।
জানা গেছে, ঈদ শেষে কাজে ফেরা মানুষের চাপ বেড়েছে রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডগুলোতে। আর টিকিট যেন সোনার হরিণ, মেলানো কষ্টসাধ্য। টিকিট মিললেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। ট্রেনে আসনের চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী। ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে ও ইঞ্জিনে উঠে গন্তব্যে ফিরছে মানুষ। অনেকেই টিকিট পেলেও আসন না পেয়ে যেতে পারছেন না গন্তব্যে।
আজ সকালে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে যাওয়া পার্বতীপুরগামী বুড়িমারী কমিউটার ৬৬ নম্বর ট্রেনটিতে ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাদে ও ইঞ্জিনে উঠে পড়েন। এতে জীবনের ঝুঁকি থাকলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অনেকটাই নীরব। তাদের নীরবতায় ঝুঁকিপূর্ণ এ যাত্রা বলে জানায় স্থানীয়রা।
অপর দিকে ট্রেনে উঠতে না পেরে অনেকেই ছুটছেন বাসস্ট্যান্ডে। সেখানেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। লালমনিরহাট থেকে রাজধানী ঢাকার বাসের টিকিট পেতে গুনতে হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা। নিয়মিত ভাড়া ৮০০–৯০০ টাকা। যাত্রী চাপের সুযোগে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে বাসমালিকেরা। প্রথম দিকে শুনতে হয় টিকিট নেই। টাকা বাড়িয়ে দিলে বাসের টিকিট মিলে কাউন্টার থেকে। যা নিয়মিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ।
নার্সিং কলেজে পড়ুয়া মেয়েকে ট্রেনে উঠিয়ে দিতে হাতীবান্ধা রেলস্টেশনে এসেছেন হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিপেন্দ্রনাথ রায়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসনের কয়েক গুণ যাত্রী ট্রেনের ভেতরে ও ছাদে উঠে পড়েছে। টিকিট সংগ্রহ করেও ট্রেনে ওঠার সুযোগ হয়নি। বাধ্য হয়ে মেয়েকে নিয়ে বাসায় ফিরতে হলো। ক্লাস করতে পারছে না মেয়ে।’
ট্রেনের ছাদে যাত্রী ওঠা প্রসঙ্গে হাতীবান্ধা রেলস্টেশন মাস্টার মাসুদ রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাত্রীদের চাপ বাড়লেও আসন বাড়ানো সম্ভব হয়নি। কাজে ফিরতে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে ছাদে উঠেছে। তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে জানানো হয়েছে।’
রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সৌমিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসআর প্লাসের একটি এসি গাড়িতে আগে ঢাকা যেতে এক হাজার দুই/তিন শ টাকা লাগত। যা আজকে (শনিবার) ২,৬০০ টাকা নিয়ে আসন দিলেও টিকিট দেয়নি।’ একই বাসে গত শুক্রবার ঢাকা পৌঁছান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আনজুম মোবাশ্বির ইসলাম। তাঁকেও গুনতে হয়েছে একই পরিমাণ টাকা।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাত্রী হয়রানি বন্ধ এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন। যাত্রীরা অভিযোগ দিতে অস্বীকার করায় হয়রানি রোধ করা কিছুটা কষ্টের। তবে যাত্রী হয়রানি বন্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।’