কোটাবিরোধী আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৪)। বাবা-মাসহ ৯ ভাই-বোনের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন ছিল তাঁকে ঘিরে। কিন্তু আজ রেখে গেলেন শুধুই হাহাকার আর আর্তনাদ! আবু সাঈদের গ্রামজুড়ে এখন শোকের ছায়া।
আজ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামে গিয়ে এমন চিত্রই দেখেন এই প্রতিবেদক।
আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। পেশায় দিনমজুর। ছেলের কথা বলতেই তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন।
তিনি বলেন, ছয় ভাই, তিন বোনের মধ্যে আবু সাঈদ ছিল সবার ছোট। অর্থাভাবে কোনো ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া করাতে পারিনি। আবু সাঈদ ছোট থেকেই ছিল অত্যন্ত মেধাবী। সে নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া করে এত দূর পর্যন্ত গিয়েছিল। পরিবারসহ এলাকাবাসীর অনেক স্বপ্ন ছিল আবু সাঈদকে ঘিরে।
ছোট বোন সুমি আর্তনাদ করে বলেন, ‘হামার ভাইকে ওরা মেরে ফেলল ক্যান? হামার ভাই বেঁচে থাকলে হামার হেরে স্বপ্ন পূরণ হলো হয়। কেটা হামাক এনা বোন কয়া ডাকপি রে।’
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম ছেলের শোকে বাক্রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। বাড়িতে অসংখ্য মানুষ ভিড় করছে। তিনি শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকছেন। মাঝে মাঝে ‘বাবা বাবা’ বলে চিৎকার করে উঠছেন।
বেঁচে থাকলে আবু সাঈদ জীবনে অনেক বড় হতেন এবং পরিবারসহ এলাকার জন্য যথেষ্ট অবদান রাখতেন বলে আশা করেছিলেন গ্রামের মানুষ।
দুপুরে বেরোবির কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের লালবাগ এলাকা থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যান। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
আরও পড়ুন-