বৃষ্টি হলেই যাতায়াত সড়কে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। পানি বের হওয়ার কোনো পথ না থাকায় কয়েক দিন চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় যাতায়াতকারীদের। আর সে কারণেই সড়কটি সংস্কারের দাবিতে দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই দুই বিদ্যালয় সংলগ্ন সুন্দরগঞ্জ-রংপুর মহাসড়কে এ মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় স্কুল দুটিতে কোনো ক্লাস নেওয়া হয়নি। সেই সঙ্গে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ শেষে বিদ্যালয় দুটি ছুটি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা উপজেলার বামনডাঙা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বামনডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, বিদ্যালয় দুটির প্রধান ফটকের সামনের দীর্ঘদিন থেকেই প্রায় ১০০ মিটার সড়ক ভাঙা। এ সড়কে নিয়মিতই কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত। এদের মধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর-কর্মচারীরাও রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও রাস্তাটি সংস্কার করা হচ্ছে না। বৃষ্টি হলেই ওই সড়কে পানি জমে যায়। সে কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাতায়াতকারীদের।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এ নেতা আরও বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পরে বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠাই। শিক্ষার্থীদের দিয়ে এ ধরনের কাজ কারাটা উচিত হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি বলেন, ‘সড়কটি সংস্কার করা দরকার। বিষয়টি আমরা স্বীকার করি। তবে ক্লাস বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করাটা ঠিক হয়নি তাঁদের।’ তাঁরা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয়েছে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধনে অংশ নিতে।’
এ অভিযোগের বিষয়ে বামনডাঙা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ‘সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নয়। ১১টার পরপর শিক্ষার্থীদের স্কুলে নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা প্রচণ্ড ঘেমে যাওয়ার কারণে নাম হাজিরা করে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহা. মাহমুদ হোসেন মন্ডল বলেন, ‘তাঁদের যাতায়াত সড়কে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা বিষয়টি কখনো আমাকে জানানো হয়নি। তা ছাড়া আজকে শিক্ষার্থীদের দিয়ে সড়ক অবরোধ এটিও জানি না। অন্যের মুখে শুনেছি। এটি ঠিক করেননি তাঁরা।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কেএম হারুন-উর-রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কেন তাঁরা এটি করেছেন কারণ জানতে চাইব।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দিয়ে সড়ক অবরোধ বিষয়টি ঠিক করেননি প্রধান শিক্ষকগণ। তাদের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে চাইব কেন তাঁরা এ ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করেছেন। তা না হলে, আমি নিজেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। শুনেছি তাঁরা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এটি করেছেন। সেই সঙ্গে সড়কের অংশটুকু সংস্কার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে।’