তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা (রংপুর)
রংপুরের পীরগাছায় পানি কমে যাওয়ায় তিস্তা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে ৪০ বসতঘর ও একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তাতীরের মানুষের।
সরেজমিনে জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলার শিবদেব, জুয়ান, গাবুড়া, হাগুরিয়া হাসিমসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় তিস্তা নদীর পানি কমে গেছে। এর সঙ্গে স্রোত বেশি হওয়ায় এসব এলাকায় নদীর পাড় ভেঙে যাচ্ছে। নদীর তীরঘেঁষা মানুষ বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন।
শিবদেব এলাকার ৪০টি বাড়ি ও একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আশপাশে তেমন নিরাপদ জায়গা না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন ভাঙনকবলিত মানুষ। কোথায় নতুন করে বসতি গড়বেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা।
ভাঙনে ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলামের বাড়ি শিবদেব চরে। তিনি বলেন, ‘নদীর পাড়োত বাড়িঘর। হামার দুঃখ সারা বছর। একবার পানি তো, একবার খরা। কোনোটাতেই শান্তি নাই। পানি বাড়লে এক কষ্ট, আর পানি কমলে ভাঙনের কষ্ট। গরিব মানুষ, কোনটে যাই, ঠিক নাই।’
শিবদেব চরের আরেক বাসিন্দা শামসুল হক বলেন, ‘পানি হইলে আবাদ নষ্ট হয়া যায়, ঘরোত পানি ওঠে। আর পানি কমলে ভাঙন শুরু হয়। এইভাবেই হামার দিন যাইবে। সাত দিনো হয় নাই ৪০টার মতো বাড়িঘরের জায়গা নদীত ভাঙ্গি গেইছে। এ ছাড়া ভাঙনের মুখে রয়েছে আরও দুই শতাধিক বসতবাড়ি।’
জানতে চাইলে ছাওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, ‘পানি বাড়ার পর তিন হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা ও দুই হাজার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ভাঙনরোধে বোল্ডারের মাথায় নিজ উদ্যোগে এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। তারপর দেখি কী করা যায়।’