হত্যাসহ চার মামলায় পঞ্চগড়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা শাখার সভাপতি নোমান হাসানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ আকতার জুলিয়েট এই আদেশ দেন।
এর আগে র্যাবের সহযোগিতায় নীলফামারী থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশ গিয়ে তাঁকে নিয়ে আসে। বিকেলে ইজিবাইকচালক আল আমিনকে হত্যা ও গুমের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। অল্প সময়ে আদালতের বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ সময় আদালত এলাকার নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। আদালত চত্বরে ছাত্রদল-যুবদলের কর্মীরা তাঁর রিমান্ডের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত (১০ নভেম্বর) নিখোঁজ ইজিবাইকচালক আল আমিনের বাবা মো. মনু বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় এই মামলা করেন। তার আগে গত ৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন আল আমিন। দুপুরে দুই তরুণের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে তাঁকে আটক করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েকজন।
পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। তারপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে ছাত্রলীগ নেতা সাদমান সাকিবের বাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আল আমিনের সঙ্গে থাকা রায়হানুল ইসলাম রিফাত ও সুজন ইসলাম নামের দুই তরুণ আহত হন।
তবে তাঁদের দুজনকে স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলেও আল আমিনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর পর থেকেই আল আমিনকে খুঁজছিল তাঁর পরিবার। খোঁজ না পেয়ে ১৪ আগস্ট পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। পরে (১০ নভেম্বর) আল আমিনের বাবা মো. মনু বাদী হয়ে সদর থানায় এই মামলা করেন। মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের ১৯ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি আবু মো. নোমান হাসানকে র্যাবের সহযোগিতায় নীলফামারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আল আমিন হত্যা, গুমসহ চারটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। আমরা আদালতে তার রিমান্ড আবেদন করব।’