রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক নারী সদস্য (মেম্বার) চেয়ারম্যানের জামার কলার ধরে থাপ্পড় দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার উপজেলার বড়বিল ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই চেয়ারম্যানও মেম্বারকে মারধর করেন। এ সময় দুজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
ওই মেম্বারের নাম সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বড়বিল ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য।
শার্টের কলার ধরে চড়ের বিষয়টি ওই নারী ইউপি সদস্য স্বীকার করলেও অস্বীকার করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হুদা।
স্থানীয় এক ব্যক্তি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ইউনিয়ন পরিষদে একটা কাজ নিয়ে এসেছিলাম। সে সময় আমি চেয়ারম্যানের রুমে। সেখানে চেয়ারম্যানসহ ইউনিয়নের মেম্বারেরা উপস্থিত ছিলেন। সাবিনা নামের ওই মেম্বার চেয়ারম্যানের হাতে কিছু আইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে বলেন, ‘‘এই নামগুলো আমার দিতে হবে।’’ এমন সময় চেয়ারম্যান আইডি কার্ডের ফটোকপিগুলো হাতে নিয়ে ওই মেম্বারের মুখের দিকে ছুড়ে মারতে উদ্যত হন এবং মেম্বারকে বিভিন্ন ধরনের অপমানজনক কথা বলেন। হুট করে চেয়ারম্যানের শার্টের কলার ধরে তাঁর গালে চড় বসিয়ে দেন সাবিনা ইয়াসমিন। এ সময় চেয়ারম্যান ওই নারীর মাথার চুল ধরে তাঁকে পিটুনি দেন। পরে উপস্থিত ইউপি সদস্যরা তাঁদের দুজনকে নিবৃত করেন। এদিকে খবর পেয়ে চেয়ারম্যানের সমর্থকেরা ছুটে আসেন পরিষদে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য বলেন‚ ‘সাবিনা চেয়ারম্যানের শার্টের কলার ধরে, তাঁদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে সবাই মিলে তাদের থামাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি মেম্বার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি এক নারীর ভাতার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে একটা কাগজ জমা দিই। তবে আমি জানতাম না ওই নারী বয়স্ক ভাতাভোগী। আমার কাছ থেকে চেয়ারম্যান ফটোকপিটি নিয়ে ওই নারীকে আমার সামনেই ফোন দিয়ে নিশ্চিত হন, ওই নারী বয়স্ক ভাতাভোগী। পরে সবার সামনে আমাকে চেয়ারম্যান বেয়াদব মহিলা বলে গালিগালাজ করেন এবং আমাকে বলেন দশ টাকার মালিক নও মাতব্বরি করতে আসো না বলেন। পরে তাঁর হাতে থাকা কাগজটা দিয়ে আমার মুখ বরাবর মারতে ধরে। আমার মাথা গরম হলে আমি তাঁর শার্টের কলার ধরি। এ সময় দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়।’
ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল হুদা বলেন, ‘পরিষদের বর্তমান হতদরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের মাটিকাটা কর্মসূচির কাজের যাচাই-বাছাই চলছে। যাচাই-বাছাই শেষে লটারির মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের নির্বাচিত করা হবে। ওই নারী সরকারি কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে সবকিছুর ভাগ চান। তিনি আজকেও পরিষদে এসে সবার সামনে ভাগ চাচ্ছিলেন। ভাগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর সঙ্গে একটু কথা–কাটাকাটি হয়। তবে হাতাহাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক পুলিশ সদস্যদের পাঠিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে তাঁর বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, খবর শোনার পর তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে বিষয়টি প্রশাসনিকভাবে তদন্ত করে দেখা হবে।