জুয়েল আহমদ, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ)
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে উদ্বোধনের এক মাস হয়ে গেলেও ফসল রক্ষা বাঁধের সংস্কারকাজ শুরু হয়নি। গত ১৫ ডিসেম্বর উপজেলার নলুয়ার হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের ৪ নম্বর প্রকল্পের সংস্কারকাজ উদ্বোধন করা হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ হওয়ার কথা। গত সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সেখানে মাটি ভরাটের কাজ শুরুই হয়নি।
ওই প্রকল্প ছাড়াও সরেজমিনে দেখা যায়, নলুয়ার হাওরের পোল্ডার ১-এর আওতাধীন ৫, ৬, ৮, ৯,
১০, ১১ ও ১২ নম্বর প্রকল্পে কোনো মাটি পড়েনি।
২, ৩ ও ৭ নম্বর প্রকল্পের কিছু অংশে মাটির কাজ চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সদস্যরা জানিয়েছেন, হাওরে মাটির তীব্র-সংকট দেখা গেছে, মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। এতে কাজ শুরু করতে একটু বিলম্ব হচ্ছে।
নলুয়ার হাওরের ৪ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি নোমান আহমদ জুয়েল বলেন, ‘হাওরে মাটির তীব্র-সংকট।
এ ছাড়া হাওরের মাটি নরম থাকায় কাটার মেশিন (খননযন্ত্র) নামানো যাচ্ছে না। তবে দু-তিন
দিনের মধ্যে কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়েই শেষ করতে পারব।’ এ প্রকল্পের ১.২০১ কিলোমিটার কাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ২৫ লাখ ৪৪ হাজার ৭৫৯ টাকা।
৬ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি শাহাদাত মিয়া বলেন, ‘মাটি কাটার মেশিন পেতে দেরি হয়েছে। এখন মেশিন পেয়েছি। দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’ তাঁর প্রকল্পে ০.৯২২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৮ লাখ ৪৫ হাজার ৫২৮ টাকা।
নলুয়ার হাওরের স্থানীয় কৃষক জাহেদ মিয়া বলেন, ‘এখনো নলুয়া হাওরের একাধিক বাঁধের কাজ শুরু হয়নি। ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে হাওর। কাজ নিয়ে শঙ্কায় আছি আমরা।’
আরেক কৃষক মাহবুব আলম চৌধুরী বলেন, ‘এ হাওরে জগন্নাথপুর ও পাশের দিরাই উপজেলার একাংশের কয়েক হাজার কৃষক বোরো ফসল আবাদ করে আসছেন। এক ফসলী বোরোই সারা বছরের একমাত্র সম্বল। প্রাকৃতিক বিপর্যন্ত ঘটলে না খেয়ে মরতে হবে।’
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার এই উপজেলার ২৪ কিলোমিটার হাওর এলাকায় ৩৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী গত ১৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ৪ নম্বর প্রকল্পের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে কাজ শুরু হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ হওয়ার কথা। এবার মোট অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৬ কোটি ৮৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
জগন্নাথপুর উপজেলা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল বলেন, ‘অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। তবে মাটি-সংকট থাকায় ভরাট কাজে একটু বিলম্ব হয়েছে। আমরা কাজ তদারকি করছি। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা হবে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরকতউল্লাহর সঙ্গে মোবাই ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।