হোম > সারা দেশ > সিলেট

প্রকল্প অসমাপ্ত থাকতেই মেয়াদ শেষ, জনদুর্ভোগ

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি  

আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১: ৪০
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ছয়টি প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রাখায় নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে রাজিব আহমেদ নামের এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এসব প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ হয়েছে অর্ধেক কিংবা তারও কম। একটির তো কাজই শুরু হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই ঠিকাদার বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের এক প্রভাবশালী নেতার আত্মীয়তাকে পুঁজি করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এসব প্রকল্পের কাজ বাগিয়েছেন। এখন তিনি কাজের এলাকায়ই যান না।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা জানান, উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দাওরাই-উত্তর হাওর সড়কের সোয়া ১ কিলোমিটার অংশে আরসিসি কাজের অনুমোদন পায় রাজিবের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাজিব এন্টারপ্রাইজ। ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার চুক্তিতে ২০২২ সালের ৭ মে কাজ শুরু হয়। কাজের মেয়াদ ছিল এক বছর। মেয়াদ শেষে হলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৬০ শতাংশ। বর্তমানে ওই সড়কের কাজ বন্ধ।

মৌমিতা এন্টারপ্রাইজ নামের আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে রাজিব ২০২২ সালের মে মাসে পাটলী ইউনিয়নের সাতহাল-কুড়িয়ান-গোয়ালভিটা সড়কের এক কিলোমিটার অংশ আরসিসি কাজের অনুমোদন পান। ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা চুক্তিতে এই কাজের মেয়াদ ছিল এক বছর। কিন্তু আড়াই বছরেও সড়কের কোনো কাজ হয়নি।

একইভাবে উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ বিভাগ থেকে দুই বছর আগে ৫ কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়ে ফেলে রেখে দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছেন রাজিব। তিন প্যাকেজে কাজ নিলেও গত জুনে মেয়াদ শেষ হওয়া কাজ এখনো শেষ হয়নি।

উপজেলা ত্রাণ কার্যালয় সূত্র বলেছে, গত ১৫ বছরে ঠিকাদার রাজিব আহমেদ কয়েক কোটি টাকার সেতু ও কালভার্টের কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনটি প্যাকেজে ৫ কোটি টাকার কাজ পান। এর মধ্যে একটি ২ কোটি ১১ লাখ, দ্বিতীয়টি ২ কোটি ও তৃতীয়টি ৯৭ লাখ টাকার। গত জুনে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।

এলজিইডি ও ত্রাণ অফিসের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, রাজিবকে কাজ আদায়ের জন্য ফোন দিলে তিনি ফোন ধরতেন না। কোনো কোনো সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটকে দিয়ে তদবির করাতেন। এ কারণে আইনি সুযোগ থাকলেও তাঁর কার্যাদেশ বাতিল করা যেত না।

জগন্নাথপুর উপজেলা থেকে সম্প্রতি বদলি হওয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আব্দুর রব সরকার বলেন, ‘রাজিব আহমেদ আমাদের পাত্তাই দিতেন না। অনেক চেষ্টা করেও তাঁর কাছ থেকে কাজ আদায় করা সম্ভব হয়নি।’

জগন্নাথপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মিজানুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন হয় ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দে তিনটি ওয়াশ ব্লকের কাজ ফেলে রেখেছেন রাজিব। আমি যোগদান করে তাঁকে অনুরোধ করে আবার কাজ শুরু করিয়েছি।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার রাজিব বলেন, ‘জগন্নাথপুরে এত টাকার কোনো কাজ আমি করিনি। আমাকে হয়রানি করার জন্য ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে।’

তবে এলজিইডি সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ঠিকাদার রাজিব শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় চারটি কাজ দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রেখেছেন। এতে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি বলেছেন কাজ শুরু করবেন। শিগগিরই এসব কাজ শুরু না করলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টিকারী কেউ যেন আমাদের মাথার ওপর না বসে: ফুলতলীর পীর

গোয়াহরি বিলে পলো বাওয়া উৎসবে মানুষের ঢল

ফেসবুক লাইভে পরিযায়ী পাখির মাংস বিক্রি, বন আদালতে মামলা

শমশেরনগর স্টেশনে পাহাড়িকা ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল, যাত্রীদের দুর্ভোগ

সেকশন