হোম > অর্থনীতি

৬ কোটি শ্রমিকের কোনো আইনি সুরক্ষা ও মজুরির মানদণ্ড নেই: সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩: ৪৬
‘শ্রমিকের জীবনমান, কর্মপরিবেশ ও অধিকারসংক্রান্ত সংস্কার উদ্যোগ: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সিপিডির সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে শ্রম অধিকার নিয়ে যত আলোচনার মঞ্চ তৈরি হয়, তার আলো ছুঁয়ে যায় মাত্র ৫ শতাংশ শ্রমিককে; যাঁরা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত। অথচ এই আলোচনার সীমানার বাইরেই থেকে যান বাকি ১০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক। কিন্তু সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সেই ৮৫ শতাংশ শ্রমিক, যাঁরা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করছেন, সংখ্যায় প্রায় ছয় কোটি।

এ বিশাল কর্মশক্তির নেই আইনের সুরক্ষা, মজুরির ন্যায্য মানদণ্ড কিংবা সামাজিক স্বীকৃতির ন্যূনতম অধিকার। তাঁদের জীবন যেন এক অন্তহীন সংগ্রাম, যেখানে ন্যায্যতার আলো পৌঁছাতে এখনো অনেক পথ বাকি।

‘শ্রমিকের জীবনমান, কর্মপরিবেশ ও অধিকারসংক্রান্ত সংস্কার উদ্যোগ: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রস্তাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন তথ্য তুলে ধরেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ।

আজ রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজস্ব কার্যালয়ে সিপিডি আয়োজিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শ্রমিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু প্রস্তাব শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখে সিপিডি।

উল্লেখ্য, শ্রম আইন সংশোধন, শ্রম বিরোধ নিষ্পত্তি, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় দেশের শ্রমজীবী মানুষের সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকার সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। কমিশন আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের সুপারিশ ও প্রস্তাব জমা দেবে।

এই আলোচনায় অংশ নিয়ে সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, দেশের ৮৫ ভাগ বা প্রায় ৬ কোটি শ্রমিকের কোনো আইনি সুরক্ষা ও মজুরির মানদণ্ড নেই।’ তিনি বলেন, ‘গৃহশ্রমিক থেকে সচিবালয় পর্যন্ত সব শ্রমিকের মধ্যে বৈষম্য ব্যাপকভাবে বেড়েছে। নির্মাণ খাতে শ্রমিকেরা সরাসরি দৃশ্যমান না থাকায় তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই অবস্থার মধ্যে আমরা আছি, যা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।’

সুলতান উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের বেতন ও অধিকার নিয়ে কেন রাস্তায় নামতে হবে? গণমাধ্যমকর্মীদের মানবাধিকারও কেন উপেক্ষিত থাকবে, তা আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। সুপারিশ প্রণয়ন শেষ নয়, বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকতে হবে।’

সভা থেকে শ্রম খাতের জন্য জাতীয় একটি অভিন্ন মজুরিকাঠামো প্রণয়নের সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে শ্রম খাতের জন্য এই সুপারিশ করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী তামিম আহমেদ। তিনি বলেন, বর্তমানে ইপিজেডে ভিন্ন আইন রয়েছে এবং সেখানে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ নেই। এ ছাড়া শ্রমিক সংগঠনে অন্তর্ভুক্তির জন্য স্বাক্ষরের শর্ত প্রত্যাহারের প্রস্তাবও করা হয়েছে।

ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন করতে কারখানার শ্রমিকদের ২০ শতাংশ স্বাক্ষরের শর্ত তুলে দেওয়ার প্রস্তাব আসে। শ্রমিকদের কল্যাণে মজুরি গ্যারান্টি বিমা চালুরও সুপারিশ করা হয়েছে, যা শ্রমিকদের অবদান ভিত্তিতে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে মজুরি প্রদানের নিশ্চয়তা দেবে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) মহাসচিব ফারুক আহমেদ, শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ শ্রমিক সংহতির সভাপতি মিজ তাসলিমা আক্তার লিমা এবং ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর নুজহাত জাবিন।

আলোচনায় গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার পরও কমিশনের কার্যক্রম কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রয়োজন রয়েছে। এতে সুপারিশ বাস্তবায়নে নজরদারি বজায় রাখা সম্ভব হবে। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার যদি আগামী এক বছরকে শ্রম কল্যাণ বছর হিসেবে ঘোষণা করে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো সেই অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করে, তাহলে কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন সহজ হবে। তবে ফরমাল সেক্টর কিছুটা প্রস্তুত থাকলেও ইনফরমাল সেক্টর এখনো সুপারিশ বাস্তবায়নে পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।

মার্সেল ডিস্ট্রিবিউটর সামিটে নতুন মডেলের প্রযুক্তিপণ্য বাজারে ছাড়ার ঘোষণা

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখার উদ্যোগে গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সঞ্চয়পত্রে প্রথমবারের মতো বাজারভিত্তিক সুদ হার নির্ধারণ

রেস্তোরাঁসহ কিছু পণ্য ও সেবার ভ্যাট কমানোর কথা ভাবছে এনবিআর

সেকশন