গত মাসের (ডিসেম্বর) মাঝামাঝি বাজারে উঠেছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সে সময়ের তথ্য অনুযায়ী, ফলন ভালো হয়েছে; যাতে চলবে প্রায় তিন মাস। মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে থাকতেই আগামী মার্চে আসবে প্রধান জাতের পেঁয়াজ। ফলে আগামী কয়েক মাস পেঁয়াজ সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই।
তবে পেঁয়াজের ভরা এই সময়েও ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার কারণে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এই সময়েও ব্যবসায়ীদের অজুহাত সরবরাহ সংকট। তবে তাঁরা বলেছেন, মোকাম ও পাইকারিতে দাম কমছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর রামপুরা বাজারে গতকাল সোমবার প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৯৫ টাকায়। দুই দিন আগে ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রির কথা জানালেন ব্যবসায়ী আল-আমিন। সপ্তাহ দুয়েক আগে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা।
পূর্ব রামপুরার মেসার্স মায়ের দোয়া এজেন্সিতে দুই ধরনের পেঁয়াজ যথাক্রমে ৯০ ও ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল। দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে দোকানি ফরিদ হোসেন বলেন, পাইকারিতে দাম বাড়লে তাঁদের না বাড়িয়ে কিছু করার নেই।
শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ সংকটের কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল। মেসার্স আজমিরি ভান্ডারের বিক্রয় প্রতিনিধি গোলাপ হোসেন বলেন, গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে; যা দুই দিন আগে ছিল ৮৫-৯০ টাকা।
দেশে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয় পাবনায়। যোগাযোগ করা হলে গতকাল সন্ধ্যায় পাবনার মথুয়াপুর গ্রামের পেঁয়াজচাষি মামুন রহমান বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে জমি থেকে পেঁয়াজ তুলতে কিছুটা সমস্যা হয়। এ কারণে দাম বেড়েছিল। দুই দিন আগে স্থানীয় বাজারে ৪০ কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি ৮০-৮৫ টাকা। তবে গতকাল থেকে দাম কমে ৪০ কেজি বিক্রি হয়েছে তিন হাজার টাকায়।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার তদারকি প্রতিবেদন বলছে, গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৯০-১০০ টাকা; যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭৫-৮০ টাকা। বিদেশি পেঁয়াজ গতকাল ছিল ১০০-১২০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে ছিল ৮৫-৯০ টাকায়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অধিশাখা) আবদুছ সামাদ আল আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। অচিরেই দাম কমে আসবে বলে তাঁর আশা।