প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ কেটে গিয়ে আবহাওয়ায় স্বস্তি মিললেও রাজধানীর কাঁচাবাজারে বেড়েছে পণ্যের দামের তাপ। সবজি, মাছ, মুরগি, ডিম—সবকিছুতেই চড়া দাম। সবজি, মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। মাছের দাম বেড়েছে অনেক। ব্যবসায়ীদের এবারের অজুহাত, গত এপ্রিলের তাপপ্রবাহ, খরা। তবে ক্রেতারা বলছেন, অযৌক্তিক।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, টমেটো, মিষ্টিকুমড়া, ফুলকপি-বাঁধাকপি ছাড়া ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। সস্তার সবজি হিসেবে পরিচিত পেঁপে প্রতি কেজি ৮০ টাকায় কিনতে হচ্ছে মানুষকে। বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৯০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১০০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৯০ টাকা, পটোল ৬০ থেকে ৮০ টাকা, মুলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তবে মিষ্টিকুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি প্রতিটির দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লাউ প্রতিটি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকা। প্রতি হালি লেবু ৪০ থেকে ৫০ টাকা। দামের কারণে সবজিও চলে যাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে।
রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘খরার কারণে সবজি কম হইছে। পাইকারিতেই বেশি দামে সবজি কেনা লাগতেছে।’
খুচরা পর্যায়ে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকা, আদা ২৪০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়।
সেগুনবাগিচায় বাজার করতে আসা সৈয়দ আহসান বলেন, ‘৯০-১০০ টাকা দিয়ে কেন সবজি কিনতে হবে? কোরবানির জন্য মসলার দামও বাড়াচ্ছে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছিল। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর দাম কেন কমল না। এটা কে দেখবে?’
গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির আগে মাংসের দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানান বিক্রেতারা।
এদিকে বাজারে মাছ সরবরাহ কম। দেশি মাছ বলতে গেলে পাওয়াই যায় না। যা আছে চাষের মাছ। দামও বেশি। প্রতি কেজি রুই আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিংড়ির দাম অনেকের নাগালের বাইরে, ৮০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি।
ব্যবসায়ীরা অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়াচ্ছেন বলে মনে করেন ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, অতি মুনাফালোভীদের কারণে বাজারে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মুনাফালোভীদের শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।